বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্যোগের আগাম বার্তা পাওয়া যাবে কমিউনিটি রেডিওতে

দুর্যোগের আগাম বার্তা পাওয়া যাবে কমিউনিটি রেডিওতে

দুর্যোগের আগাম বার্তা পেয়ে জনগণ যাতে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে পারে সেজন্য কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে স্থানীয় ভাষায় বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।

এনামুর রহমান বলেন, জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দুর্যোগপূর্ব প্রস্তুতি, আসন্ন দুর্যোগের কবল থেকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণের জন্য বেতার, টেলিভিশন ও স্থানীয়ভাবে দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি দ্রুত এবং অধিকতর কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে ইন্টার‌্যাক্টিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) চালু করা হয়েছে।

‘মোবাইল ফোন নম্বর থেকে ১০৯০ (টোল ফ্রি) নম্বরে ডায়াল করে দুর্যোগের আগাম বার্তা পেয়ে জনগণ পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এ বার্তা আরো অধিকতর জনবান্ধব করার লক্ষ্যে কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে স্থানীয় ভাষায় বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ’

ঢাকায় আয়োজিত ‘রিস্ক ইনফরমড আর্লি অ্যাকশন পার্টনারশিপ-কমিটমেন্ট টু অ্যাকশন’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল ডায়ালগে তিনি একথা বলেন বলে বুধবার (১২ মে) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ঘনবসতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। তাছাড়া ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণী, বুলবুল এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এসব ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনসহ সামাজিক নিরাপত্তা অর্জনে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ। দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সারাবিশ্বে।

‘দুর্যোগঝুঁকি হ্রাস ও দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয়ক কার্যক্রম সমন্বিত, লক্ষ্যভিত্তিক ও শক্তিশালী করা এবং সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১১, মরদেহ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০১৬, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি) ২০১৯ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দলিল প্রণীত হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রতিবন্ধী, নারী, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুসহ দুর্গত জনগোষ্ঠীর চাহিদা নিরূপণ ও বাস্তবায়ন। ’

তিনি বলেন, ২০১৫-২০৩০ সাল মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত হয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)। উল্লেখিত আইন, বিধি, পরিকল্পনা ও নীতিমালার আলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্কের লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেন, দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয় টেকসই নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর উপকূলীয় অধিবাসীদের জান-মাল ও সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি লাঘব করার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে সরকারি কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করেন। এভাবেই ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) পরিপূর্ণভাবে যাত্রা শুরু করে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এক নতুন মাত্রা লাভ করে।  

‘বর্তমানে প্রায় ৭৪ হাজার সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক উপকূলীয় এলাকায় কাজ করছেন। সিপিপি বিশ্বব্যাপী সেরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের একটি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি, প্রশমন ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিকশিত হয়েছে। ’

দৈনিক বগুড়া