টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার আনোয়ারা বেগম। এতে সচ্ছলতা এসেছে তার পরিবারে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারধুনট গ্রামে আনোয়ারা বেগমের দৃষ্টিনন্দন টমেটো ক্ষেত। থোকা থোকা শোভা পাচ্ছে টমেটো। এবছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দামে টমেটো বিক্রি করতে পেরে কৃষাণীর মুখে ফুঠেছে হাসি।
আনোয়ারা বেগম জানান, স্বামী ভ্যানচালক। এক ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে অভাবের সংসার তার। অভাবের সংসারে স্বামী একা যোগান দিতে হিমশিম খেতেন। তাই সংসারের অতিরিক্ত আয় বৃদ্ধির জন্য কৃষি কাজের উদ্যোগ নেন আনোয়ারা। নিজের কোনো আবাদি জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন তিনি। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ২০১৮-২০১৯ সালে ১০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে টমেটো চাষ করে ভালো সফল্যের মুখ দেখেন। এবার তিনি এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে টমেটো চাষ করেছেন।
আনোয়ারা বেগম নিজ হাতে টমেটো চারা বপন করেছেন। চারাগাছ ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত নানা পরিচর্যা করতে হয় তাকে। টমেটো গাছ একটু বড় হলে মাচা দিতে হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে টমেটো পাকা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ক্ষেত থেকে পাকা টমেটো তোলেন আনোয়ারা বেগম। মাঝে মধ্যে ছেলেও সাহায্য করেন তাঁকে। তবে টমেটো বাজারে বিক্রির কাজটা করেন তার স্বামী।
আনোয়ারা বেগম জানান, জমি তৈরি, চারা রোপণ, কীটনাশক প্রয়োগ, বাঁশের মাচা তৈরি ও পরিচর্যা মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। শনিবার তিনি ১২শত টাকা মন দরে ক্ষেতের টমেটো বিক্রি করেছেন। তাঁর টমেটো বাগানে যে পরিমাণ ফল এসেছে, তাতে বাজার দর ঠিক থাকলে প্রায় দেড় লাখ টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন আনোয়ারা।
অন্য ফসল চাষের অভিজ্ঞতা থাকলেও টমেটো চাষে সাফল্য পেয়েছেন আনোয়ারা বেগম। তাদের ছেলে-মেয়ে পড়ালেখা করছে। সংসারে এখন আর কোনো অভাব নেই। আনোয়ারা বেগমের সাফল্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন এলাকার অন্য কৃষানীরাও।
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিদুল হক জানান, চলতি মৌসুমে ধুনট উপজেলায় ২৯০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবছর টমেটো ভালো ফলন হয়েছে। পুরুষ কৃষকের পাশাপাশি কিষাণীরাও টমেটো চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের টমেটো চাষের পরামর্শ, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করেছে।
দৈনিক বগুড়া