বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ওরিক্স

বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ওরিক্স

কালিয়াকৈরে ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’-তে বায়োটেকনোলজি নিয়ে কাজ করবে ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেড। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে ব্লক-২ এ ২৫ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে তারা ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার আগারগাঁও এ আইসিটি টাওয়ারের অডিটোরিয়ামে এ-লক্ষ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে হবে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ, এতে প্রায় ২০০০ জনের উচ্চ বেতনের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ দেশ বায়ো-প্রযুক্তিতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। যা ভিশন- ২০২১ বাস্তবায়নে ব্যাপক অবদান রাখবে বলে উপস্থাপনায় বলা হয়। 

উন্নত বিশ্বে এখন (বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, চীন, জাপান) বায়ো-টেকনোলজির ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। মূলত Human Plasma থেকে বায়ো-টেক পণ্য উৎপাদিত হয়। এইচআইভি এইডস এবং ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় এসব বায়ো-টেক ওষুধ এখন ব্যবহার হচ্ছে। ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেড বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বছরে ১২০০ টন প্লাজমা বিশ্লেষণে সক্ষম প্ল্যান্ট নির্মাণ করতে চায়, যার সঙ্গে ২০টি প্লাজমা সংগ্রহ স্টেশন সংযুক্ত থাকবে। প্রতিষ্ঠানটি এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য উন্নত বিশ্বের মান বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে বায়ো-টেক পণ্য সহজলভ্য হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, কালিয়াকৈরের ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’ দেশের প্রথম ও বৃহত্তম হাই-টেক পার্ক। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ সরেজমিনে এই পার্কটি পরিদর্শন করে পার্কের উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ৩৫৫ একর জমিতে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’-তে বর্তমানে ৩৭টি কোম্পানিকে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে সেখানে ৫টি কোম্পানি উৎপাদন শুরু করেছে। কোম্পানিগুলো এই পার্কে মোবাইল ফোন অ্যাসেম্বলিং ও উৎপাদন, অপটিকাল কেবল, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ডাটা-সেন্টার প্রভৃতি উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে। 

তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’-তে এরইমধ্যে ৩২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এছাড়া প্রায় ১৩০০০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী ২০২৫ সনের মধ্যে হাই-টেক পার্কগুলোতে ২৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে বলে আমরা আশাবাদী। তিনি হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগ সম্ভবনা ও সুযোগ সম্পর্কে একটি উপস্থাপনা পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, আইসিটি বিভাগ ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি ও ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা পূরণে হাই-টেক পার্ক অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, সামিট টেকনোপলিসের বরাদ্দকৃত ২০ একর জমি এবং ভবনে দেশের প্রথম এবং বৃহত্তম বায়ো-টেক শিল্প খাতে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই বিনিয়োগ কার্যকর করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষির্কী উদযাপনের বর্ণিল বছরে এটি অত্যন্ত সন্তোষজনক ব্যাপার যে, এই প্লাজমা ফ্রাকশানেশন প্ল্যান্টটি বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ একেবারে ন্যূনতম জনবল নিয়েও নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। 

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ওরিক্স বায়ো-টেকের চেয়ারম্যান কাজী শাকিল, সামিট টেকনোপলিশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা খান, আইসিটি ডিভিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীগণ। ভিডিও কমিউনিকেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হোন ওরিক্স বায়ো-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড বো।

দৈনিক বগুড়া