বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লাব্বাইক ধ্বনিতে আরাফার পথে হাজিরা...

লাব্বাইক ধ্বনিতে আরাফার পথে হাজিরা...

হাদিসের ভাষায়- ‘আল-হাজ্জু আরাফাহ’ অর্থাৎ: আরাফার ময়দানে উপস্থিত হওয়াই হজ। 

আরবি হিজরি সনের ৯ জিলহজ মুসলিম উম্মাহকে হজ পালনে ঐতিহাসিক এ ময়দানে উপস্থিত হতে হয়। এ যে বিশ্ব মুসলিমের সম্মিলন স্থল বা মিলনমেলা। 

আজ ৯ জিলহজ (বৃহস্পতিবার) সূর্যোদয়ের পর থেকে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আরাফার ময়দান মুখী হজে অংশগ্রহণকারীরা। আরাফার ময়দানে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা ও ইবাদত-বন্দেগি চলবে সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত।

বৈশ্বিক মহামারি নভেলকরোনার কারণে এ বছর আরাফার ময়দানে হজ পালনকারীদের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সেবার সর্বোচ্চ ব্যবস্থাও নিশ্চিত করেছে হজ ও ওমরাহ কর্তৃপক্ষ। আরাফার ময়দানে প্রচণ্ড গরম মোকাবিলায় নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও প্রস্তুত রাখা হয়েছে অভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবক ও স্বাস্থ্য সেবকদল।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ কর্তৃপক্ষ হজে অংশগ্রহণকারী আল্লাহর মেহমানদের আরাফার ময়দানে গ্রহণ করতে প্রস্তুত। এবার হজে অংশগ্রহণকারী ১০ হাজার হাজি আজ জোহরের আগেই জমায়েত হবেন ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে। দুপুরে শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে সুলাইমান আল-মানিয়ার কণ্ঠে শুনবেন হজের খুতবা ও দিকনির্দেশনা।

তাওবাহ-ইসতেগফার, তাকবির ও তালবিয়ায় মুখরিত থাকবে ঐতিহাসিক আরাফার ময়দান। হজে অংশগ্রহণকারীরা এক সামিয়ানায় সমবেত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।

হাজিদের উপস্থিতিতে এবারের আরাফার ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ না হলেও বিশেষ ব্যবস্থায় জাবালে রহমতের পাদদেশে হজ পালন করবেন হাজিরা। মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের ইতিহাসে এবারই প্রবীণ শায়খ ড. আব্দুল্লাহ ইবনে সুলাইমান আল-মানিয়া মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশ্যে খুতবা দেবেন।

মহামারি করোনার কারণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবার সৌদি আরবের বাইরে থেকে  পবিত্র হজ পালনে  কোনো লোক অংশগ্রহণ করতে পারেনি। তবে সৌদি বসবাসকারী বিশ্বের ১৬০ দেশের মানুষ এবারের হজে অংশগ্রহণ করেছে। যেখানে অন্যান্য বছর প্রায় ২৫ লাখ লোক হজে অংশগ্রহণ করতো সেখানে সবমিলিয়ে ১০ হাজার লোকের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের হজ।

বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহও আজ হজ পালনকারীদের সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে তাদের জন্য দোয়া কামনা করছে। যাতে হজে অংশগ্রহণকারীরা সুস্বাস্থ্য, সুস্থতা ও নিরাপত্তার মাধ্যমে সুন্দরভাবে হজ সম্পাদন করতে পারে।

সব হাজির কাণ্ঠে একই আওয়াজ- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান-নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’।

বিশ্ব মুসলিমের কল্যাণ কামনাসহ মহামারি করোনা থেকে মুক্তি চাইবে হজে অংশগ্রহণকারীরা। দিনভর কান্নাকাটি দোয়া-ইসতেগফারের পর সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে রওনা হবে মুজদালিফার দিকে। যেখানে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাবে মুসলিম উম্মাহ। আর এর মাধ্যমেই পালিত হবে হজ।

দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, রহমত প্রাপ্তি ও নিজেদের গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহ তায়ালার দরবারে অশ্রুসিক্ত নয়নে ফরিয়াদ জানাবে সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমান। সংখ্যায় অল্প হলেও মহামারি করোনার এ সময়েও বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের এক অনুপম দৃশ্যের অবতারণা হবে আজ আরাফার ময়দানে।

দৈনিক বগুড়া