অজপাড়াগাঁয়ে বিদ্যুৎ, ঝলমলে জীবন
দৈনিক বগুড়া
প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২০

চর নাজির গ্রামটি একেবারেই অজপাড়াগাঁ। মাত্র এক বছর হলো সেখানে বিদ্যুৎ গেছে। আর তাতেই বদলে গেছে মানুষের জীবন। কীভাবে, তার একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। চর নাজিরের তরুণ আরিফ ব্যাপারীর বাবা দিনমজুর। যা আয় করতেন, তাতে টেনেটুনে কোনো রকমে সংসার চলত। বিদ্যুৎ আসার পরে আরিফ এখন ব্যাটারিচালিত ভ্যানগাড়ি চালান। খরচ মিটিয়ে দিনে আয় ৫০০ টাকার বেশি।
চর নাজির গ্রামটি দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াডালি ইউনিয়নে। গত মাসে ওই গ্রামে গিয়ে কথা হয় আরিফের সঙ্গে। জানা গেল, আরিফ আর তাঁর বাবার উপার্জন দিয়ে এখন বেশ ভালোভাবেই সংসার চলে যায়। দুই ভাইবোনকে উচ্চশিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখছেন এই তরুণ।
এই গ্রামটির মতো দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। তাই জীবন বদলানোর গল্পটি শুধু বালিয়াডালির আরিফের নয়; পাবনার সুজানগরের চর রামকান্তপুরের মোজাম্মেল হোসেন, নীলফামারীর বালাগ্রামের কাঁঠালিয়ার রঙ্গের বাজারের সুভাষ অধিকারী ও ফুলতি রানীর জীবনেও স্বাচ্ছন্দ্য এনেছে বিদ্যুৎ।
গ্রামে বিদ্যুৎ যাওয়ার পর ব্যাটারিচালিত যানবাহন যেমন পরিবহনে সহজ করেছে, তেমনি মধ্যরাত পর্যন্ত জেগে থাকছে বাজার। বেচাকেনা বাড়ছে। সেচে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে। পোলট্রি ও গবাদিপশুর খামার করা সহজ হয়েছে। ঘরে ঘরে ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম বিক্রি বাড়াচ্ছে করপোরেটের।
বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাবে, দেশের ৯৯ শতাংশ এলাকায় এখন বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। আগামী মাস, অর্থাৎ ডিসেম্বরের মধ্যেই শতভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আসার ঘোষণা দেবে সরকার। অবশ্য একটু পেছনে ফিরে তাকালেই দেখা যাবে, কী করুণ অবস্থা ছিল। ২০০৯ সালে বছর আগেই বিদ্যুতের বাইরে ছিল দেশের ৫৩ শতাংশ এলাকা। আর যেখানে বিদ্যুৎ ছিল, তাদের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ ছিল নিত্যসঙ্গী।
যা-ই হোক, এখন দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা (স্থাপিত) ২০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। ১১ বছরে গ্রাহকসংখ্যা সাড়ে তিন গুণ হয়েছে (৩ কোটি ৮২ লাখ)। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে যদি ৪ কোটি মানুষের জীবনেও পরিবর্তন আসে, তাহলে সেটি অনেক বড় পরিবর্তন। গ্রামের মানুষের চাহিদা বেশি না, তারা শহরের মানুষের মতো গাড়ি চায় না, তারা টিকে থাকার অর্থনীতি চায়।
রঙ্গের বাজারে উজ্জ্বল সন্ধ্যা
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের রঙ্গের বাজারে সন্ধ্যা নামতেই দোকানপাট বন্ধ হয়ে যেত। কারণ, বিদ্যুৎহীন বাজারে মানুষ থাকত না। কিন্তু সম্প্রতি উপজেলাটি শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আসার পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। রঙ্গের বাজারে মানুষ এখন বেশ রাতেও কেনাকাটা করে। সারা দিন কাজ শেষে সন্ধ্যার পর জমে প্রাণবন্ত আড্ডা। বাজারের দোকানি সুভাষ অধিকারী বলেন, ‘বিদ্যুৎ আসার পর দোকানের সংখ্যা বাড়ছে। বিক্রিও ভালো।’
পাবনার সুজানগরের বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসেনের গল্পটা একটু ভিন্ন। মোজাম্মেল জানান, আড়াই বছর আগে তাঁর গ্রামে বিদ্যুৎ আসে।
নিজের বাড়িতে তখনো তিনি বিদ্যুৎ–সংযোগ নেননি। একদিন বাজারে চায়ের দোকানে টেলিভিশনে সরকারিভাবে জর্ডানে যাওয়ার ব্যবস্থার বিষয়টি জানতে পারেন। সেই সুযোগ নিয়ে সামান্য খরচেই চলে যান জর্ডান। এর আগে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য জমি বিক্রি করে দুবার দালালকে ২ লাখ টাকা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু যেতে পারেননি।
দেশের কৃষকেরা এখন সেচযন্ত্র চালাতে ডিজেলের বদলে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। ২০০৯ সালে সারা দেশে বিদ্যুতের সেচ পাম্প ছিল ২ লাখ ৩৪ হাজার। এখন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজারে। পাবনার সুজানগর উপজেলার চর রামকান্তপুর, ঢালারচরের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ–সংযোগ পৌঁছে যাওয়ার কারণে ছোট ছোট উদ্যোক্তা গড়ে তুলেছেন নতুন ধরনের কর্মসংস্থান। ধান ভাঙানোর কল, পোলট্রি মুরগির ফার্ম, ওয়েল্ডিং মেশিন কারখানা ইত্যাদি করে ভাগ্য বদলাচ্ছে মানুষ। সুজানগরের বাসিন্দা মনু মোল্লা বলেন, ওয়েল্ডিংয়ের কারখানা হওয়ার পর বাড়িঘরের জানালা বানানোর কাজটা স্থানীয় বাজারেই করতে করা যায়। এতে খরচ কম পড়ছে।
দেশের ১ হাজার ৫৯টি গ্রামে এখনো বিদ্যুতের আওতার বাইরে রয়েছে। এসব গ্রাম পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) এলাকার। আরইবি সূত্র বলছে, বাকি গ্রামে মোট গ্রাহক হতে পারেন ২ লাখ ৪০ হাজার। এর বড় অংশ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায়। সেখানে নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে ভোলা থেকে বিদ্যুৎ নেওয়ার কাজ চলছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, লক্ষ্মীপুর, পটুয়াখালী ও ভোলার ২৯টি গ্রামের প্রায় ছয় হাজার বাড়িতে সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে আরইবির পক্ষ থেকে। কারণ, ওই সব বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন নির্মাণ করা সম্ভব না।
সৌর বিদ্যুৎ ও রাঙ্গাবালীতে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে। এটি হলে বাংলাদেশে শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় আসবে। আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন বলেন, যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়েছে, সেখানকার সাধারণ মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বাকিগুলোতেও আসবে।
গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ চলে গেলেও মান নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। গ্রামে লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ সমস্যা রয়েই গেছে। সরকারের এখন মূল পরিকল্পনা সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। এ জন্য সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় নজর দিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন বিদ্যুতের ক্ষমতা ২০ হাজার ৩৮৩ মেগাওয়াট হলেও উৎপাদনের প্রয়োজন হয় ১০ হাজার মেগাওয়াটের আশপাশে। ফলে বাড়তি উৎপাদনক্ষমতা এখন অনেকটা মানুষের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) তথ্যমতে, ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে গত অর্থবছর পর্যন্ত বেসরকারি বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট (আইপিপি) ও রেন্টাল কেন্দ্রগুলোকে ৬১ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা কেন্দ্র ভাড়া বা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিয়েছে সরকার।
বিইআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় দাম ছিল ইউনিটপ্রতি ৪ টাকার কম। এখন সেটা ৭ টাকার বেশি। সার্বিক বিষয়ে বড় অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ও সাবেক বিদ্যুৎ–সচিব এম ফওজুল কবির খান বলেন, সারা দেশ বিদ্যুতের আওতায় আসা মানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক প্রভাব ফেলা। কিন্তু এই বিদ্যুৎ হতে হবে সাশ্রয়ী মূল্যে। দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ বেশ ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।

- ২০২৩ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ
- বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আশা বাংলাদেশের
- ডানা মেলছে গরিবের স্বপ্ন
- শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে
- কৃষিতে আশার আলো
- রাজধানীর বাইরে হবে চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল
- রাজশাহীর আট জেলায় চালু হচ্ছে ই-ট্রাফিকিং ব্যবস্থা
- গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে প্রস্তাব যাবে জাতিসংঘে
- গাবতলীর কৃষ্ণচন্দ্রপুর প্রা: স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্বোধন
- আদমদীঘি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা
- বগুড়ায় অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে ৬ জনের জেল-জরিমানা
- বগুড়ায় র্যাবের অভিযানে গাঁজাসহ গ্রেফতার ২
- বগুড়ায় পাঁচ মামলার আসামী গাঁজাসহ গ্রেফতার
- বিএনপি সরকারের ব্যাংক লুট ঋণ জালিয়াতি দেশকে পথে বসিয়ে দিয়েছিল
- বিএনপির দুর্নীতিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যোগাযোগ ও বিদ্যুৎখাত
- কোকোর সিমেন্স দুর্নীতি: বিএনপির জঘন্য অধ্যায়
- শেরপুরের ১৬৩টি ভূমিহীন পরিবার পাবেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার
- বগুড়াসহ ৩১ পৌরসভার ভোট ২৮ ফেব্রুয়ারি
- বগুড়ায় শেষ হলো পুলিশ সুপার কাপ ব্যাটমিন্টন টুর্নামেন্ট
- বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে মাদক ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার পর হেরোইনসহ আটক
- কাহালুতে নারীদের চিকিৎসার জন্য ভায়া ক্যাম্পের উদ্বোধন
- বগুড়ার আদমদীঘিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের সাহায্যে ধানের চারা রোপণ
- সংস্কৃতিচর্চা নতুন প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখবে:তথ্যমন্ত্রী
- প্রকাশ্যে এলেন ‘নিখোঁজ’ জ্যাক মা
- সয়াবিন এর ভেষজ গুণাগুণ
- নতুন ফ্লাগশিপ ফোন আনছে মটোরোলা
- জীবনে সুখ ও আনন্দ পেতে মুমিনের করণীয়
- নলেন গুড়ের পায়েস তৈরির সহজ রেসিপি
- তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান
- করোনা কেড়ে নিল বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাইস উদ্দিনকেও
- জামায়াত-শিবির আর জঙ্গিতে পূর্ণ হেফাজতের কমিটি
- বগুড়ায় মাস্ক না পরা ও পলিথিন বিক্রি ব্যবহার করায় দায়ে জরিমানা
- বঙ্গবন্ধুর নামে লন্ডনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়
- বগুড়ার দুর্ধর্ষ ডাকাত লুৎফর গ্রেফতার
- বগুড়ায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ২
- বগুড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই ফার্মেসিকে জরিমানা
- শেরপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত,এক বছরে জরিমানা আদায় সাড়ে ১৭লক্ষ টাকা
- ভ্রমণকারীর সাওয়াব লেখা হবে যেভাবে
- ভার্চুয়ালি বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
- চুল পড়া কমাতে পেয়ারা পাতার জাদু
- কিশোরীকে ঢাকায় আটকে রেখে ধর্ষণ, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে আটক ১
- বগুড়ায় বিপুল পরিমান ফেন্সিডিলসহ ১ জন গ্রেফতার
- যখনই বিপদ-অশান্তিতে পড়বেন তখনই যে ৩ আমল করবেন
- সকালের পাঁচ অভ্যাসেই গলবে পেটের চর্বি
- বগুড়ায় ভ্রাম্যমান আদালতে মাস্ক না পরায় জরিমানা
- শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি দেবে একটি পাতা
- যে ৪ ধরনের ব্যক্তিকে আল্লাহ বেশি ঘৃণা করেন
- একনেকে ৩৩০৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
- বিলিম্বি ফলের ভেষজগুণ
- বগুড়ায় বোর্ডিং থেকে তিন নারীসহ গ্রেফতার ৪
