বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিয়ামতপুর তালগাছের নিচে চলছে পিঠা উৎসব

নিয়ামতপুর তালগাছের নিচে চলছে পিঠা উৎসব

গ্রামবাংলায় উৎসব মানেই বাহারি নানা ধরনের পিঠাপুলির আয়োজন। তালের পিঠা দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন বরেন্দ্র অঞ্চলের রেওয়াজ। যদিও বর্তমানে উৎসবের রং আগের চেয়ে অনেকটাই বদলে গেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আজও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষ।

প্রবাদে আছে, ভাদ্রের তাল পাকা গরম! সেই তাল দিয়ে কত কী–ই না বানানো যায়। তালের বড়া বাঙালির রসনায় লোভনীয় একটি খাবার। তাল দিয়ে বানানো হয় নানা স্বাদের রসাল পদ। বর্তমান প্রজন্মের অনেকের কাছে অবশ্য বিষয়টি অচেনা। আর তাই নতুন প্রজন্মকে জানাতে বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র নওগাঁয় আয়োজন করা হয়েছে তালপিঠা উৎসব।

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের ঘুঘুডাঙ্গা তালতলীতে (তালসড়ক) গত শনিবার দিনব্যাপী তালপিঠা উৎসবের আয়োজন করে উপজেলা পরিষদ। সন্ধ্যায় ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিঠা উৎসব ঘিরে তালতলী সড়কে জমজমাট পরিবেশ দেখা গেছে। সারি সারি তালগাছের মনোরম সৌন্দর্যের সড়কটিকে পর্যটকদের কাছে পরিচিত করতে গত বছর থেকে তালপিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছে উপজেলা পরিষদ।

রোববার আয়োজকেরা জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ধশতাধিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পিঠা উৎসবে অংশ নেয়। উৎসবে পিঠার সম্ভারও ছিল বৈচিত্র্যময়। প্রায় ৩০ ধরনের তালপিঠা ছাড়াও বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে বানানো বাহারি নামের পিঠাও ছিল মেলায়।

তাল দিয়ে বানানো পিঠার মধ্যে জামাই পিঠা, তালক্ষীর, পাকান, পুলি, কানমুচুরি, হৃদয়হরণ, ঝিনুক পিঠা, তালের কেক, তালের ফুলঝুরি, পাখির বাসা, তালের মাংস সিংড়া উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি পিঠার দাম ১০ থেকে ৫০ টাকা। প্রতিটি স্টলে ২০ থেকে ৩০ ধরনের পিঠা ছিল। বাড়ি থেকে বানিয়ে আনা পিঠার পাশাপাশি বিভিন্ন স্টলে পিঠা তৈরি করতেও দেখা গেছে।

বিকেলে পিঠা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, মানুষ এ সড়ক দিয়ে যখন যায়, তালগাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে একটু প্রশান্তি পায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ প্রমুখ।

উৎসবের আয়োজক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ বলেন, এবারের উৎসবে মানুষের সাড়া দেখে তিনি অভিভূত। অনেক দূরদূরান্ত থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হরেক রকমের পিঠার সমাহার নিয়ে এখানে স্টল দিয়েছে। ঘুঘুডাঙার তাল সড়কটি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সড়কের পাশে খাসজমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে গণশৌচাগার বানানো হয়েছে।

দৈনিক বগুড়া