• শুক্রবার ০২ জুন ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৯ ১৪৩০

  • || ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৪

ইউরোপে যাবে গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচ

দৈনিক বগুড়া

প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২৩  

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচ রপ্তানি হবে ইউরোপে। রপ্তানির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব শিগগিরি বাণিজ্যিকভাবে মশলা জাতীয় এ ফসল বিদেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন গোসাইরহাট উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাহাবুদ্দিন।

গোসাইরহাটের জয়ন্তিকা নদীর দুই পাড়সহ আলাওলপুর, কোদালপুর ও কুচাইপট্টিতে প্রতি বছরের মতো এবছরও কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শ, অনুকূল আবহাওয়া, জয়ন্তিকা নদীর পলিমাটি ও পানির কারণে মরিচ চাষ ভালো হয়েছে।

তিন মাস পরিশ্রম করে কাঁচা মরিচ চাষ করে ৪ গুণ লাভবান হয়েছেন সাইখ্যা গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ হাওলাদার। তিনি জানান, কাঁচা মরিচ ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৪ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করি আমি। রাস্তাঘাট উন্নত হওয়ায় পাইকাররা মাঠ থেকে মরিচ সংগ্রহ করে। অতিরিক্ত কোনো খরচ করতে হয় না। ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ১ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করেছি। কাঁচা মরিচ বিদেশে রপ্তানি হলে আমার মতো অনেক কৃষকেরই ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যাবে।

কৃষক করিম মৃধা বলেন, ৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হয়। কৃষি অফিসারের পরামর্শে আমি এ বছর বিজলী প্লাস জাতের মরিচ চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। মরিচের দামও অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি। আমাদের মতো প্রান্তিক কৃষকের ফসল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। এটা জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। মরিচ রপ্তানি শুরু হলে দুঃখ-কষ্ট থাকবে না আর।

মাঠ থেকে মরিচ সংগ্রহ করতে যারা সাহায্য করেন। তাদের বেশিরভাগ নারী। আমিরন নামে একজন মরিচ সংগ্রহকারী বলেন, মরিচ রপ্তানি হলে আমাদের বাড়তি আয়ের সুযোগ অনেক বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে আমরা ৬ ভাগে মরিচ সংগ্রহ করে দেই কৃষকদের। একজন ব্যক্তি একদিনে ৫০-৬০ কেজি মরিচ সংগ্রহ করতে পারে। আমরা কৃষকের কাছে পাইকারি দরে মরিচগুলো বিক্রি করে দেই। দিনে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা আয় হয় আমাদের।

জুলেখা নামে অন্য আরেকজন মরিচ সংগ্রহকারী জানান, বাড়ির কাজের ফাঁকে ফাঁকে মরিচ সংগ্রহের কাজ করে বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়েছে আমাদের। মরিচ সংগ্রহের বিষয়টি নিজের ওপর নির্ভর করে। ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন একজন। বাড়তি আয়ের এই সুযোগে অনেকে নিজের শখের জিনিসপত্রগুলো কিনতে পারছেন। ইউরোপে মরিচ পাঠানো হলে গ্রামের কৃষকদের পাশাপাশি আমাদের অর্থনৈতিক কষ্ট দূর হবে যাবে।

গোসাইরহাট উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সঙ্গে গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচও ইউরোপে রপ্তানি করার প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে চলমান রয়েছে। আশা করছি শিগগিরি গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচ বিদেশে রপ্তানি করতে পারব। গোসাইরহাটে মশলা চাষ খুবই জনপ্রিয়। মশলা জাতীয় ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় মরিচ। আমাদের চরাঞ্চলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে বোরা মরিচ হয়ে থাকে। তবে জনপ্রিয় জাত হচ্ছে বিজলী প্লাস। এবছর ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। আগামিতে জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে। কাঁচা মরিচের দাম ভালো এখন। বাজার দর ৪ হাজার টাকা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের জাজিরা উপজেলা থেকে বিদেশে ফসল রপ্তানি হচ্ছে। সেখানে মরিচ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। 

দৈনিক বগুড়া
দৈনিক বগুড়া