শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফরিদপুরে কুসুম ফুলের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা!

ফরিদপুরে কুসুম ফুলের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা!

ফরিদপুর জেলায় বাণিজ্যিকভাবে কুসুম ফুল চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন মজিবর মোল্লা ও মইনুল বেপারী। তারা দুইজনে মোট ৫ বিঘা জমিতে কুসুম ফুল চাষ করেছেন। আবহাওয়া ও মাটি উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন। এটি একটি তেলবীজ শস্য।

এ ফুলের বীজ থেকে উৎপাদিত তেল প্রাকৃতিক ও উন্নত মানের ভোজ্য তেল হিসেবে ব্যবহারে খ্যাতি রয়েছে। মানবদেহের জন্য ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ। এছাড়া দেশি-বিদেশি পাখির খাবার হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। কুসুম ফুল চাষে সফলতা দেখে অনেকেই এ ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

সরেজমিনে জানা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলার চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে বালু মাটির পড়ে থাকা পতিত জমি গুলোতে কুসুম ফুলের চাষ হচ্ছে। মজিবর মোল্লা ও মইনুল বেপারীর কুসুম ফুলের বাগানে দেখা যায়, আড়াই থেকে সাড়ে তিন ফুট লম্বা গাছের পাতা ও কান্ডের রং গাঢ় সবুজ। প্রতিটি গাছে ফুটে আছে সাদা, হলুদ, লাল ও খয়েরিসহ ৭টি রঙের পাপড়িযুক্ত ফুল। বাহারি এসব ফুলের পাপড়ি পাখির কচি পাখনার পালকের মত তুলতুলে। এমনই নজরকাড়া অপরূপ ফুলের নাম কুসুম।

কুসুম ফুল চাষি কৃষক মজিবর মোল্লার বলেন, আমি কৃষি অফিসের পরামর্শে ৩ বিঘা পতিত জমিতে কুসুম ফুল চাষ করেছি। এ ফুল চাষে তেমন কোন খরচ নেই। কীটনাশক বা সার দেওয়ার ও প্রয়োজন পরে না। চাষে রোগবালাইও হয় না। তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন পরে না জমি চাষ দিয়ে বীজ বপন করলেই হয়। বীজ বপনের ৪ মাসের মধ্যে ফলন আসে। বাজারে এর চাহিদাও বেশ ভালো। প্রতি বিঘাতে ৫-৬ মণ কুসুম ফুলের বীজ পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতি মন কুসুম ফুলের বীজ ৫-৬ হাজার টাকা মণ বিক্রয় হচ্ছে। কুসুম ফুলের বীজ পাখির খাদ্য ও তেল উৎপান হয়ে থাকে।

কুসুম ফুল চাষি মইনুল বেপারী বলেন, আমি প্রথমবার কুসুম ফুল চাষ করেছি। এর আগে এ ফুল চাষ করেনি। প্রতি বিঘা জমিতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। দুই বিঘা জমিতে কুসুম ফুল চাষ করেছি। ফলন ভালো পেয়েছি। এ ফুল চাষে তেমন পরিচর্যার দরকার পরে না। শুধু জমি চাষ দিয়ে বীজ বপন করলেই হয়। নতুন এ ফুল চাষ দেখে অনেক কৃষক কুসুম ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

ফরিদপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, এ বছর ফরিদপুরে ১১০ হেক্টর জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করা হয়েছে। ফলন ভালো পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। চরাঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে বেশ কয়েকজন কৃষক তেল জাতীয় ফসল কুসুম ফুলের চাষ শুরু করেছেন। পোকামাকড়ের আক্রমণ কম, কম খরচে অনাবাদি জমির জন্য কুসুম ফুলের চাষ অন্যতম। বাজারে চাহিদা ভালো থাকালে কুসুম ফুলের চাষে আগামীতে আরও বাড়বে। এছাড়া আমরা কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ ও সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি যাতে তারা এ ফুল চাষে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠে।

দৈনিক বগুড়া