শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ক্যাপসিকাম চাষে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি লাভ

ক্যাপসিকাম চাষে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি লাভ

ফেনীর সোনাগাজীতে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকামের চাষাবাদ। অনুকূল আবহাওয়া, উপযুক্ত মাটি এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বেশ কয়েকজন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে এ সবজিটির চাষাবাদ করছেন।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় ১ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ হয়েছে। চাষিরা আগ্রহী হওয়ায় চরচান্দিয়া ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় আবু সাইদ রুবেল ও পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড উত্তর চরচান্দিয়া এলাকায় শহিদুল্লাহ নামে দুইজন কৃষকের জমিতে ক্যাপসিকাম চাষের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে।

বেশ কয়েকজন কৃষক ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাণিজ্যিকভাবেও এ সবজির চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সোনাগাজীতে ক্যাপসিকামের ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা। এটি জানার পর আশপাশের অনেক চাষি এ সবজির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে আগামী মৌসুমে চাষাবাদ করবেন বলে জানা গেছে।

চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ক্যাপসিক্যাম চাষি আবু সাঈদ রুবেল জানান, ক্যাপসিকাম সারাবিশ্বেই একটি জনপ্রিয় ও মূল্যবান সবজি। এটাকে আমাদের দেশে মিষ্টি মরিচও বলা হয়।

বাংলাদেশেও ক্যাপসিকামের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ক্যাপসিকামের আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার ও ত্বক পুরু হয়।

আমাদের দেশে ক্যাপসিকাম খাওয়ার প্রচলন বেশি না থাকলেও ক্রমেই এর কদর বাড়ছে। দেশের অভিজাত হোটেল ও রেস্টুরেন্টে এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। ভিটামিন সি’সহ অন্যান্য পুষ্টিগুণে ভরা এ সবজি বিদেশে রপ্তানি করেও বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

স্থানীয় রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আহমদ করিম জানান, রেস্টুরেন্টে সালাদসহ অভিজাত বিভিন্ন খাদ্য তৈরিতে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করা হয়। স্থানীয়ভাবে এ সবজির জোগান না থাকায় রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলা থেকে এটি সরবরাহ করতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ফেনীতে এ সবজির উৎপাদন হলে স্থানীয় রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।

ক্যাপসিকাম চাষাবাদের বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র নাথ জানান, প্রতি বিঘায় ক্যাপসিকামের ফলন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কেজি পর্যন্ত হতে পারে। সবুজ ক্যাপসিকাম প্রতি কেজির বাজার মূল্য ১৫০ টাকা। আর লাল ও হলুদ রঙের ক্যাপসিকাম কেজি ৩৫০ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি জানান, ক্যাপসিকাম চাষিদের প্রতি বিঘায় খরচ হয় প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘার ফলন বিক্রি হয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। ক্যাপসিকাম চাষে কৃষকের লাভ দ্বিগুণের চেয়েও বেশি থাকে।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী শফিউল ইসলাম জানান, ক্যাপসিকাম চাষাবাদের জন্য সোনাগাজীর মাটি অত্যন্ত উপযোগী। এ সবজিটি চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতে প্রদর্শনী, বীজ এবং সার দেওয়া হচ্ছে। সঠিকভাবে উৎপাদিত সবজির ভালো দাম পাওয়া গেলে এসব এলাকার কৃষকরা ক্যাপসিকাম চাষাবাদের দিকে কৃষকরা আরও বেশি ঝুঁকতে পারেন বলে মনে করেন এ কৃষি কর্মকর্তা।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ: