সংগৃহীত
লার্স ইমিল ব্রান—পেশায় ছিলেন দুগ্ধপণ্য ব্যবসায়ী। ডেনমার্কের বাসিন্দা তিনি। নতুন-পুরোনো মুদ্রা সংগ্রহ করা ছিল তাঁর শখ। দীর্ঘদিন ধরে জমিয়েছিলেন নানা ধরনের মুদ্রা। রীতিমতো ভান্ডার গড়ে তোলেন।
সেই ইমিলের মৃত্যুর শত বছর পরে এসে তাঁর সংগ্রহ করা মুদ্রাগুলো নিলামে উঠছে। পুরো এক শতাব্দী এসব মুদ্রা যত্ন করে আগলে রাখা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নিলামে এসব মুদ্রার দাম উঠতে পারে ছয় কোটি পাউন্ড।
ইমিলের জন্ম ১৮৫২ সালে। শৈশব থেকে মুদ্রা সংগ্রহ করা ছিল তাঁর শখের একটি কাজ। যত বড় হয়েছেন, এই শখ আরও জোরালো হয়েছে; সেই সঙ্গে সমৃদ্ধ হয়েছে ইমিলের মুদ্রার সংগ্রহ। শেষ পর্যন্ত তাঁর সংগ্রহে মুদ্রার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার।
নিউইয়র্কভিত্তিক নিলামঘর স্টেকস বোয়ার্স আগামী শরতে ইমিলের সংগ্রহের মুদ্রাগুলো নিলামে তুলবে। কিন্তু এত দিন পর এসে কেন এসব মুদ্রা নিলামে উঠছে—এমন প্রশ্ন মনের কোণে উঁকি দেওয়াই স্বাভাবিক।
এর কারণ ইমিল নিজেই। মৃত্যুর আগে তিনি উইল করে গিয়েছিলেন। তাতে বলা ছিল, ইমিলের মৃত্যুর পর শত বছর ধরে সংগ্রহের মুদ্রাগুলো জমিয়ে রাখতে হবে। শতক পেরোলে তবেই তা বিক্রি করা যাবে।
১৮ শতকে দুগ্ধপণ্যের ব্যবসা করে ব্যাপক অর্থকড়ি কামিয়েছিলেন ইমিল। স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন ছিল তাঁর। এ করণে শখ পূরণে দেশি-বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ কারাটা সহজ ছিল তাঁর জন্য। ডেনমার্ক, নরওয়ে আর সুইডেন থেকেও মুদ্রা, ব্যাংক নোট ও মেডেল সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সংগ্রহের মুদ্রা, ব্যাংক নোট ও মেডেল হারানোর ভয় জেঁকে বসেছিল ইমিলের মনে। তাই বিশ্বযুদ্ধ শেষে তিনি সংগ্রহের অমূল্য জিনিসগুলো রক্ষায় একটি উইল করেন। আর তাতে এক শতক ধরে এসব বিক্রি না করার শর্ত জুড়ে দেন।
ইমিলের মৃত্যুর পর থেকে এসব সংগ্রহ ডেনমার্কের একটি রাজপ্রাসাদে সংরক্ষিত ছিল।পরে তা ডেনমার্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
স্টেকস বোয়ার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিকেন ইয়েগপারিয়ান বলেন, ‘প্রথম যখন এসব মুদ্রার কথা জেনেছি, তখন আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি, আমাদের কাছে এমন কিছু মুদ্রা আছে, যেগুলো শত বছর ধরে বাজারে পাওয়া যায় না।’
নিলামে তোলার আগেই ডেনমার্কের জাতীয় জাদুঘর ইমিলের সংগ্রহ থেকে ছয়টি স্বর্ণমুদ্রা ও একটি রৌপ্যমুদ্রা কিনে নিয়েছে। তবে এ জন্য কত অর্থ গুনতে হয়েছে, তা জানানো হয়নি।
সূত্র: প্রথম আলো