বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর উদযাপন

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর উদযাপন

বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বের ৫০ বছরে প্রথমবারের মতো ‘মৈত্রী দিবস’ উদযাপিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ১০ দিন আগে আজকের এই দিনে ভারত ও ভুটান স্বাধীন এবং সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছিল। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই বাংলাদেশ ও ভারত মৈত্রী দিবস উদযাপন করছে।

চলতি বছরের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী ৬ ডিসেম্বরকে ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেন।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা ও নয়াদিল্লিতে নানান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের আরও ১৮টি শহরে মৈত্রী দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।

দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভারতীয় হাইকমিশন সংবর্ধনা ও সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।

গান বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসের পরিচালনায় জমকালো সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের ৫০ জন শিল্পী সংগীত পরিবেশন করেন। মুক্তিযুদ্ধ থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাস তুলে ধরে সরকারের নির্মিত একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী দু’দেশের মৈত্রী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান প্রদর্শন করা হয়।

এছাড়া উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দু’দেশের যৌথভাবে নির্বাচিত লোগো এবং ব্যাকড্রপ ঢাকা এবং সারা বিশ্বে প্রদর্শিত হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘মহামারি করোনার অব্যাহত চ্যালেঞ্জ এবং একটি জটিল বৈশ্বিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও ভারত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। ঢাকা ও নয়াদিল্লি ছাড়াও বিশ্বের অন্তত ১৮টি শহরে এ মৈত্রী দিবস উদযাপিত হচ্ছে। এতো বড় আকারে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে যৌথভাবে এ ধরনের মাইলফলক উদযাপনের চেষ্টা আগে কোনো রাষ্ট্র করেনি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক মানচিত্র বদলে দিয়েছে। এটি আমাদের আদর্শিক মানচিত্রকেও বদলে দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে যে, অভিন্ন সংস্কৃতি, সভ্যতা এবং ভাষার এ বন্ধন বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর একসঙ্গে থাকতে না পারার মতো মিথ্যা তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামও বর্বরতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের বিজয়ের অনিবার্যতা প্রমাণ করেছিল।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের আমন্ত্রিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে মৈত্রী দিবসের আয়োজনকে যুগান্তকারী উল্লেখ করেন। তারা বলেন, দুই বন্ধু দেশের অভিন্ন মূল্যবোধ, সংস্কৃতি এবং নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

এসময় পারস্পরিক আস্থা, শ্রদ্ধা ও সমঝোতার ভিত্তিতে রচিত উভয় দেশের অদ্বিতীয়-ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বকে আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তারা।

দৈনিক বগুড়া