শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাঝেও নতুন বইয়ের সৌরভ

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাঝেও নতুন বইয়ের সৌরভ

শিক্ষার উন্নয়নে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে চলেছে সরকার। এরমধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় শিশুদের বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে বই। চলতি শিক্ষাবর্ষেও দুই লক্ষাধিক বই বিতরণ করা হয়েছে। 

জানা যায়, বর্তমানে দেশে ৪৫টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেরই নিজস্ব ভাষা ও বর্ণমালা রয়েছে। পার্বত্য চুক্তি, শিশুনীতিসহ জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন ও সনদ অনুযায়ী, মায়ের ভাষায় শিক্ষাগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। সেই তাগিদে বর্তমান সরকার ২০১২ সালে প্রথম দফায় ৫টি মাতৃভাষায় প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং পড়াশোনা শুরুর উদ্যোগ নেয়। 

এর মধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য জাতীয় পর্যায়ে মাল্টি ল্যাংগুয়েল এডুকেশন (এমএলই) কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য তিনটি কমিটি গঠন করে। আর ২০১৭ সাল থেকে দেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জনগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় পড়াশোনার জন্য বই বিতরণ শুরু করে সরকার। 

পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় শিশুদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেয়া শুরু হয়। প্রথম বছর শুধু প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য বই মুদ্রণ করা হয়। তবে দ্বিতীয় বছর ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণি এবং ২০১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তাদের পাঠ্য বই দেয়া হয়। এ বছর নতুন করে তৃতীয় শ্রেণির বই দেয়া হয়েছে। 

চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৯৭ হাজার ৫৭২ শিশুর জন্য পাঁচটি ভাষায় রচিত প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির দুই লাখ ৩০ হাজার ১০৩টি কপি বই বিতরণ করা হয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বইও রয়েছে এর মধ্যে। এছাড়া গত শিক্ষাবর্ষে ৯৮ হাজার ১৪৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে  বিতরণ করা হয় দুই লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৪টি পাঠ্যবই।

জানা যায়, পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঠ্যবই রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা ছাড়াও হবিগঞ্জের বাহুবল; মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা ও কুলাউড়া; রংপুরের পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর; জামালপুরের বকশীগঞ্জ, শেরপুরের শ্রীবর্দী ও নেত্রকোনার দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিতরণ করা হয়। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ২০১৭ সাল থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের জন্য নিজস্ব বর্ণমালা সম্বলিত মাতৃভাষায় পাঠ্যবই দেয়া হচ্ছে। আগামী দিনে বাংলাদেশ যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখে, আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর যে পথ সেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাথেয় শিক্ষা। সেই শিক্ষার উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। 

তিনি আরো বলেন, আমাদের বঙ্গবন্ধু যে সোনার মানুষ চেয়েছিলেন, এর মধ্য দিয়েই আমরা সেই সোনার মানুষ তৈরি করতে পারব। তাদের হাতেই তৈরি হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ।

এদিকে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাইরেও সাঁওতাল, খেয়াং, খুমি, লুসাই, মুন্ডা, মণিপুরি, মুরং, পাংখোয়া, হাজং, খাসিসহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য নৃগোষ্ঠী রয়েছে, যারা এখনো মাতৃভাষায় পাঠ্যবই পায়নি। 

এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের মোট ১৯ থেকে ২০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠ্যবই প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু অনেকেই এসব ভাষা বলতে পারে, কিন্তু লিখতে পারে না। ফলে আমরা সঠিক বর্ণ খুঁজে পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সহায়তাও নিচ্ছি।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চিরতরে বন্ধ হবে: রেলমন্ত্রী
ঈদের ছুটিতে বগুড়ায় যমুনার পাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের ঢল
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিত
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
বো*মের মতো সিলিন্ডার বি*স্ফোরণ, করণীয় কী
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
স্মার্টফোন থেকে ছবি মুছে গেলে উদ্ধার করবেন যেভাবে
বৈসাবি উৎসবের আমেজে ভাসছে ৩ পার্বত্য জেলা
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই