শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামীর দেনা শোধ করতে গিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেন মাকসুদা

স্বামীর দেনা শোধ করতে গিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেন মাকসুদা

ছোট স্টলটি নানা পণ্যে ঠাসা। মানিব্যাগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, পাসপোর্টের কাভার, জ্যাকেট কী নেই সেখানে। সবই চামড়ার তৈরি। সেসব পণ্য বিক্রি করছেন একজন নারী। তাঁর নাম মাকসুদা খাতুন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে চলমান আট দিনব্যাপী জাতীয় এসএমই মেলায় গত বৃহস্পতিবার শাবাব লেদারের স্বত্বাধিকারী মাকসুদা খাতুনের সঙ্গে কথা হয়। বললেন, এসএমই মেলায় তাদের আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে।

আলাপচারিতায় জানা গেল, মাকসুদা খাতুনের পথচলা অতটা মসৃণ ছিল না। শুরুতে বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছিলেন। চাকরিজীবী পরিবারের মেয়ে, পরিবারের কারও ব্যবসার অভিজ্ঞতা ছিল না। মাকসুদা নিজেও কর্মজীবন শুরু করেছিলেন শিক্ষকতা দিয়ে। কিছুদিন শিক্ষকতা করার পর চাকরি ছেড়ে যোগ দেন বায়িং হাউসে।

মাকসুদা তাঁর স্বামী শোয়াইব হোসেন চামড়ার তৈরি দস্তানা রপ্তানি করতেন। সেই ব্যবসায় একবার বড় ধরনের লোকসান হয়। লোকসানের ধাক্কা সামলাতে নিজেদের কেনা ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন এই দম্পতি। কিন্তু তাতেও দেনা শোধ হয়নি। তত দিনে মাকসুদা বুঝে গেছেন, চাকরির বেতনে সেই ঋণ শোধ করা যাবে না। তাই ব্যাংকের সঞ্চয় ভেঙে ও নিজের গয়না বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।

মাকসুদা খাতুন ২০১৫ সালে মাত্র ৫ জন কর্মী নিয়ে হাজারীবাগে শুরু করেন শাবাব লেদার। এখন কর্মী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে। মাকসুদা বললেন, ‘আগে থেকে স্বামীর চামড়ার ব্যবসা ছিল। আবার আমি নিজেও কাজ করেছি বায়িং হাউসে। দুইজনের দুই অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করেই আমরা চামড়ার ব্যবসা শুরু করি। শুরুতে পরিস্থিতি এমন ছিল যে ঘুরে ঘুরে বিপণিবিতানে পণ্য বিক্রি করতে হতো। এভাবে কেটে যায় প্রথম বছর।’

মাকসুদা খাতুন বলেন, শুরুতে আমার পরিচিত কিছু বায়িং হাউসের ক্রেতাদের কাছে কাজের নমুনা ও ছবি ই-মেইলে পাঠাতাম। পরে তাঁরা ওয়েবসাইট তৈরির পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে হঠাৎ এক ডাচ্ দম্পতি ব্যাগের কার্যাদেশ দেন। তাঁরা সেই ব্যাগ জাপানে রপ্তানি করবেন। এ ঘটনা তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

মাকসুদা বলেন, ওই ক্রয়াদেশের পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। শাবাব লেদারের পণ্য এখন নিয়মিত স্পেন, ইতালি ও কানাডায় রপ্তানি হয়। বছরে এখন তাঁর রপ্তানি আয় দুই কোটি টাকারও বেশি।

ব্যবসা করতে মাকসুদা ব্যাংক ঋণ নিয়েছেন। আবার তা শোধও করেছেন সময়মতো। সে জন্য ব্যাংকের সঙ্গেও সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। করোনার সময় ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নামে, তখন কী করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মাকসুদা বলেন, করোনার শুরুতে সরকার যে প্রণোদনা ঋণ দেয়, সেটি তারা পান। ওই সময় স্পেনে বেল্ট রপ্তানি করেন। তাই স্থানীয় বাজারে বিক্রি তেমন একটা না থাকলেও সমস্যায় পরতে হয়নি।

২০১৯ সালে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে দোকান নেন মাকসুদা। রপ্তানির পাশাপাশি দোকান ও অনলাইনে দেশের বাজারে পণ্য বিক্রি করছে তাঁর শাবাব। ধীরে ধীরে ব্যবসা আরও বড় করার স্বপ্ন দেখেন মাকসুদা।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চিরতরে বন্ধ হবে: রেলমন্ত্রী
ঈদের ছুটিতে বগুড়ায় যমুনার পাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের ঢল
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিত
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
বো*মের মতো সিলিন্ডার বি*স্ফোরণ, করণীয় কী
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
স্মার্টফোন থেকে ছবি মুছে গেলে উদ্ধার করবেন যেভাবে
বৈসাবি উৎসবের আমেজে ভাসছে ৩ পার্বত্য জেলা
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই