বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কোয়েল পালনে স্বাবলম্বী মেহেদী, মাসে আয় ৪০ হাজার

কোয়েল পালনে স্বাবলম্বী মেহেদী, মাসে আয় ৪০ হাজার

বাগেরহাটে কোয়েল পালনে স্বাবলম্বী হয়েছেন মেহেদী হাসান। ৭৯টি বাচ্চা থেকে তার খামারে এখন ১৬ হাজার কোয়েল পাখি রয়েছে। তার এই খামার থেকে মাসে আয় হয় ৪০-৪৫ হাজার টাকা। কোয়েল পালনে তার এই সফলতা দেখে অনেকেই আগ্রহী হয়েছেন কোয়েল পালনে। তার কাছ থেকে কোয়েল পালন বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছেন অনেকেই।

জানা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামে পিচঢালা রাস্তার পাশে মেহেদী হাসানের বাড়ি। বাড়ির প্রবেশ দ্বারে রয়েছে পুকুর। দুই ঘরে থাকে মেহেদী হাসানের কোয়েল পাখি। ডিম এবং মাংসের জন্য পালন করা হয় আলাদা আলাদাভাবে। করোনাকালে হঠাৎ লোকসানে পড়েন বয়লার মুরগির খামারি শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান। তার এই লোকসান কাটাতে শখের বশে ঘরে থাকা ইনকিউবেটরে কোয়েলের ডিম ফোটানোর চেষ্টা শুরু করেন। এর পর থেকে আর পিছু ফিরে তাকারে হয়নি তাকে।

মেহেদী হাসানের বাবা শেখ সরোয়ার হোসেন বলেন, সংসার চালাতে ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতাম। কিন্তু ছেলে কোয়েলের চাষ শুরু করার পরে বাড়িতে ফিরে আসি। সবাই মিলে কোয়েল পালন করে আমরা এখন বেশ ভালো আছি।

বাবা শেখ সরোয়ার হোসেন, বর্তমানে প্রতিদিন সাড়ে চার হাজার ডিম ও সপ্তাহে চার হাজার পাঁচশ কোয়েল বিক্রি করেন মেহেদী। প্রতিটি ডিম ২ টাকা থেকে ২ টাকা ৫ পয়সা এবং কোয়েল ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় পাইকারি দরে। সব ধরনের ব্যয় বাদ দিয়ে দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হয় মেহেদীর।

মেহেদী হাসান বলেন, আমার খামারে প্রায় ১২০০ মুরগির খামার ছিল। রোগে মৃত্যু ও দাম কমে যাওয়ার কারণে আমি প্রায় সাত লাখ টাকার ঋণে পড়ে যাই। একপর্যায়ে হতাশা থেকে মুক্তি পেতে কোয়েল পালন শুরু করি। বর্তমানে খাবারের দোকানের দেনা প্রায় সব শেষ করে দিয়েছি। আশা করছি কোয়েল চাষের মাধ্যমে বেশ লাভবান হতে পারবো।

কোয়েল পালন নিয়ে মেহেদী জানান, একটি বাচ্চা মাংসের উপযোগী হয় ২৭ থেকে ২৮ দিনে। বাচ্চা থেকে ডিম পারা শুরু করে ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মাথায়। প্রতিটি কোয়েলের পেছনে দিনে ৪৫ থেকে ৫০ পয়সার খাবার ব্যয় হয়। এর সঙ্গে কর্মচারী, বিদ্যুৎ বিলসহ আনুসঙ্গিক নানা ব্যয় রয়েছে। কোয়েল ও ডিমের দাম কিছুটা বাড়লে আরো বেশি লাভ করতে পারতাম।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ লুৎফর রহমান বলেন, কোয়েল পালন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমান যারা খামারি রয়েছেন তাদের জন্য বাজারের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। মেহেদীর মত আরও যুবকরা যদি কোয়েল পালনে এগিয়ে আসন, তাহলে আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।

দৈনিক বগুড়া