শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সবজি চাষে স্বাবলম্বী এক ইউনিয়নের চারশ কৃষক

সবজি চাষে স্বাবলম্বী এক ইউনিয়নের চারশ কৃষক

সিলেটের সীমান্ত উপজেলা জৈন্তাপুরে গত কয়েক বছর ধরে সবজির চাষ বেড়েছে। উপজেলার এক ইউনিয়নেই সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন চার শতাধিক কৃষক। অথচ চার থেকে পাঁচ বছর আগেও এই ইউনিয়নের লোকজন পাথর কোয়ারিতে কাজ করতেন। কিন্তু সরকার পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা দিলে তারা শাকসবজি চাষে মনোযোগী হন।

জানা গেছে, উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ১১টি গ্রামে এবার সবজি চাষ করেছেন চার শতাধিক কৃষক। বাম্পার ফলন হওয়ায় আগাম শাকসবজি বিক্রি করে তাদের কেউ কেউ এখন লাখপতি। আবার কেউ কেউ সবজি বিক্রির টাকা দিয়ে করেছেন পাকাঘর।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিজপাট ইউনিয়নের রুপচেং, নয়াগ্রাম, মাঝেরবিল, কালিঞ্জি, দিগারাইল, হর্নি, বাইরাখেল, লক্ষ্মীপ্রসাদ হাওর, লক্ষ্মীপ্রসাদ, কামরাঙ্গী এবং পাখিবিল এই ১১ গ্রামের মাঠজুড়ে সবুজ শাকসবজিতে ভরপুর হয়ে আছে।

জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে গ্রামগুলোর কৃষকরা জানান, আগাম জাতের শাকসবজি চাষ করে তারা ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। আগাম সবজির চাহিদা বেশি থাকায় জৈন্তাপুরের সবজি সিলেট ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। দামও পাচ্ছেন ভালো। তাই এই এলাকার কৃষকরা শাকসবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

নিজপাট ইউনিয়নের রুপচেং গ্রামের সবজি চাষি হেলাল আহমদ জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে বরবটি চাষ করেছেন। আগাম চাষ করায় অন্য বছরের তুলনায় এবার বাজারও ভালো পেয়েছেন। এছাড়া চলতি মাসেই তিনি একই জমির শিমও বাজারে তুলবেন। আশা করছেন, শাকসবজি চাষ করে এবছর তিনি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।

হর্নি গ্রামের কৃষক মো. জয়নুল আবেদীন জানান, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে বরবটিসহ আগাম জাতের সবজি চাষ করেছেন। বরবটিতে এবছর চাষের খরচ ও পারিবারিক ব্যয় বাদেও তিনি দেড় লাখ টাকা আয় করেছেন। মাঠে যে সবজি আছে সেগুলো বিক্রি করে আরও ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পাবেন। সবজি চাষের এই টাকা দিয়ে বছরের বাকি দিন তিনি পরিবারের খরচ চালাতে পারবেন।

জয়নুল আবেদীন আরও জানান, একই জমিতে তিনি শিম রোপণ করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে শিম থেকে আরও দুই লক্ষাধিক টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে তার। তবে শিম চাষে আলাদা কোনো খরচ লাগবে না। এক খরচে দুটি ফলন পাচ্ছেন তিনি।

দীর্ঘদিন থেকে কৃষিকাজ করলেও সরকারি কোনো সহায়তা পাননি জানিয়ে তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে তিনি প্রতি বছর পাঁচ থেকে সাত বিঘা জমিতে শাকসবজি চাষ করতে পারতেন।

কালিঞ্জি গ্রামের কৃষক শফিক আলী জানান, তিনি প্রায় চার বিঘা জমিতে ঝিঙা, করলা, লাউ এবং বরবটি চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। বাজারে দামও ভালো। ফসলের মাঠ থেকে সবজি বিক্রি করতে পারছেন। বাইরের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীরা ট্রাক নিয়ে এসে সবজি কেনায় তাকে বাড়তি কোনো ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে না।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী রেজওয়ান করিম সাব্বির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় নিজপাট ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের বাসিন্দারা শাকসবজি চাষে মনোযোগী হয়েছেন। যার কারণে শাকসবজি চাষ করে শত শত মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছেন। এই গ্রামগুলোতে আধাকাঁচা ঘর নেই বললেই চলে। সবাই সবজি চাষ করে পাকাবাড়ি করেছেন।

জৈন্তাপুর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সুহেব আহমদ বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে উপজেলা কৃষি অফিস সহায়তা, কৃষক প্রশিক্ষণ, ভর্তুকির সার-বীজ-কীটনাশক, বিভিন্ন ফলজ বাগান তৈরি করে দিচ্ছে। এরইমধ্যে অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন। ক্রমান্বয়ে উপজেলার সব কৃষকরা সরকারি সুবিধা ভোগ করবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, আমি এই উপজেলায় সদ্য দায়িত্ব পেয়েছি। উপজেলায় ব্যাপকহারে কৃষকরা নানা ধরনের শাকসবজি ও ফল চাষ করে কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বলে শুনেছি। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষদের প্রশিক্ষণ, সার, বীজ, কীটনাশকসহ বিভিন্ন সরকারি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। অচিরেই আরও নতুন করে কৃষকরা বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধার আওতায় আসবেন।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চিরতরে বন্ধ হবে: রেলমন্ত্রী
ঈদের ছুটিতে বগুড়ায় যমুনার পাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের ঢল
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিত
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
বো*মের মতো সিলিন্ডার বি*স্ফোরণ, করণীয় কী
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
স্মার্টফোন থেকে ছবি মুছে গেলে উদ্ধার করবেন যেভাবে
বৈসাবি উৎসবের আমেজে ভাসছে ৩ পার্বত্য জেলা
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই