বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সমন্বিত খামারে উদ্যোক্তা সোহানের বাৎসরিক আয় ১৩ লাখ টাকা!

সমন্বিত খামারে উদ্যোক্তা সোহানের বাৎসরিক আয় ১৩ লাখ টাকা!

চুয়াডাঙ্গার কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল কাদির সোহান সমন্বিত খামার করে সফল হয়েছেন। তার সফলতায় একালায় বেশ সাড়া পড়ে যায়। খামারের সফলতার কথা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। তার স্বপ্ন ছিল এমন কিছু করবেন যাতে নিজের পাশাপাশি অন্যেরও আয়ের ব্যবস্থা হয়। তাই বাবার দেওয়া ২ বিঘা জমি ও ৫০ হাজার টাকা নিয়ে খামার শুরু করেন। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক খামার করার প্রতি আগ্রহী হয়েছেন।

জানা যায়, ২০০৮ সালে মাধ্যমিকে পড়ার সময় বাবার সাথে মাঠে কাজ করতে যেতেন সোহান। তখন কৃষি কাজের প্রতি তার আলাদা একটা টান সৃষ্টি হয়। তারপর খামার করার কথা পরিবারে বললে তেমন সাড়া পাননি তিনি। এসএসসি পাশের পর কৃষির ওপরে ডিপ্লোমা এবং তারপর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব এগ্রিকালচার এডুকেশন (বিএজিএড) ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকরি করা তার বাবার ইচ্ছা থাকলেও তার খামার করার ইচ্ছা ছিল। তাই পড়াশোনা শেষ করে বাবার কাছ থেকে ২ বিঘা জমি ও ৫০ হাজার টাকা নিয়ে খামার শুরু করেন। লাভের মুখও দেখা শুরু করেন দ্বিতীয় বছর থেকে। তা-ই নয়, মাত্র ৭ বছরের মাথায় দেখেন অভাবনীয় সফলতা। এখন সব খরচ বাদ দিয়ে তিনি বছরে লাভ করছেন ১৩-১৫ লাখ টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে তার বাগানে বারোমাসী কাটিমন আম, ডকমাই আম, বারি৪ আম, কিউ যাই, পালমার ব্যানানা, সূর্য ডিম, আলফানচু, চাকাপাতা, ব্রুনাইটিং, গৌরমতী, আর টু ই টু জাতের আম, চাইনিজ কমলা, দার্জিলিং কমলা, বারি মাল্টা-১, ২, ভিয়েতনামি বারোমাসী মাল্টা, ফিলিপাইনস ব্ল্যাক সুগারক্যান, বিভিন্ন প্রজাতির ফুলসহ সিজনাল শাক-সবজি ও দেশীয় ফুল-ফলের চাষ করা হচ্ছে।

আব্দুল কাদির সোহান বলেন, স্বপ্ন ছিল এমন কিছু করবো, যাতে নিজের পাশাপাশি অন্যেরও কর্মসংস্থান হবে। সেই ভাবনা থেকেই সমন্বিত খামার গড়ে তুলি। আমার চাকরি করাটা বাবার ইচ্ছা থাকলেও আমার ইচ্ছা ছিল খামার করা। পড়াশোনা শেষ করে বাবার দেওয়া ২ বিঘা জমি ও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সমন্বিত খামার শুরু করি।

তিনি আরো বলেন, খামার শুরু করার প্রথম বছরই ২ বিঘা জমিতে বারোমাসী কটিমন আম, থাই সিডলেস লেবু ও পেয়ারার চাষ করি। চাষের দ্বিতীয় বছরেই লাভের মুখ দেখতে পাই। তারপর ১০ একর জমি লিজ নিয়ে খামার আরো বড় করি।

সোহান আরো বলেন, আমি ৯ বিঘা জমিতে মাছের চাষও করছি। আমার খামারে এখন ১০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। এরমধ্যে ৬ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। আমি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরে খুবই আনন্দিত। বর্তমান ২০২২ সালের এপ্রিলে ১ বছরের আয়-ব্যয় হিসাব করে আমার লাভের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩ লাখ টাকার মতো।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, আমরা কৃষি উদ্যোক্তা সোহানের খামারটি পরিদর্শন করেছি। তিনি নিজের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে সহযোগীতা করেছেন আরো অনেকের। কৃষি খাতে তার সফলতা দেখে অনকে বেকার তরুনরা কৃষি কাজে আগ্রহী হাচ্ছেন। আমরা তাকে এবং নতুন উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগীতা করবো।

দৈনিক বগুড়া