
ছোটবেলা থেকেই পাখির প্রতি ভালোবাসা তামিম আহমেদের (২৯)। প্রথমে পাখি পালন করা তার শখ হলেও এখন তা আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। এখন এলাকায় সবাই তাকে চেনেন ‘পাখি তামিম’ নামে।
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল পৌর শহরের মোকশেদ আলীর ছেলে তামিম আহমেদ। তিনি রানীশংকৈল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। নতুন উপজেলা কমিটির সভাপতি প্রার্থী তামিম। তার পাখির খামার দেখতে ও কিনতে প্রতিদিন অনেক পাখিপ্রেমী আসছেন তার খামারে। তার দেখাদেখি পাখি পালনে আগ্রহী হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
তামিম আহমেদের বাসার কাছে যেতেই শোনা গেল পাখির কলরব। ছাদে গিয়ে আটকে গেল চোখ। সুন্দর ও পরিচ্ছন্নভাবে সাজানো পাখির খাঁচা। নানা প্রজাতির অসংখ্য লাভবার্ড, কাকাতুয়া, ফিঞ্চ, দেশি-বিদেশি কবুতরসহ বিভিন্ন পাখি। আর এসব পাখির মধ্যে কিছু ওড়াউড়ি করছে। কিছু বাসা বানাচ্ছে। এরকম মনোরম দৃশ্য দেখতে অনেকেই আসছেন তার পাখির খামারে। পাখির এই খামারের পাশাপাশি নিজস্ব পুকুরে মাছ চাষ করেন তামিম।
পাখি কিনতে এসেছেন আনারুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন। তারা বলেন, শুনেছি তামিম ভাইয়ের এই পাখির খামারে বাজরিগার পাখি আছে। তাই নিতে এসেছি। তার পাখির খামারটি দেখে অনেক ভালো লাগল। অনেক রকমের পাখি আছে এখানে।
খামার দেখতে আসা রাকিব আহমেদ বলেন, পাখির কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখার পর আজ সরাসরি দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভালো লাগল। আমি বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিয়েছি। আমিও বাসায় এমন একটি পাখির খামার করবো।
পাখিপ্রেমী তামিম হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকেই পাখির প্রতি ভালোবাসা ছিল। সেই ভালোবাসা থেকেই পাখির খামার করা। আমি প্রথমে অল্প পরিসরে এই খামার করি। একসময়ের শখ আজ ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আশা করি আগামীতে আরও বড় পরিসরে পাখির খামার করবো।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালে দুটি বাজরিগার পাখি এনে বাসার ছাদে একটি খাঁচায় রাখি। পরে সেই পাখি বাচ্চা দিলে সেটিকে বড় পরিসরে করার চিন্তা করি। ২০১৮ সালে বগুড়া থেকে ১৮ জোড়া পাখি কিনে এনে ছাদে একটি পাখির সেট তৈরি করি। কিছু দিন যাওয়ার পর পাখিগুলো ডিম দেওয়া শুরু করে। তারপর ক্রমশ পাখির সংখ্যা বাড়তেই থাকে। এখন ৫০ জোড়ার অধিক পাখি আছে আমার খামারে। খামারটি করতে ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রতিমাসে খরচ বাদ দিয়ে তিন হাজার টাকার মতো লাভ আসে। বিগত চার বছরে লাখ টাকার বেশি আয় করেছি।
তামিম আহমেদ বলেন, প্রতিদিন কাউন, ভাত, খিচুড়ি, কুসুম দানা, কাঁচা বুট, সবজি এসব খাবার দিই। এটিকে আরও বড় করার চিন্তা-ভাবনা আছে। সেই সঙ্গে এখানে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই।
রানীশংকৈল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মৌসুমী আক্তার বলেন, তামিম আহমেদের খামার সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে তার পাখির খামারকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য সহযোগিতা করা হবে।
দৈনিক বগুড়া