বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কেঁচো সার উৎপাদন করে লাভবান ৫২ নারী

কেঁচো সার উৎপাদন করে লাভবান ৫২ নারী

গোয়ালন্দ উপজেলা সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত স্বরূপার চক গ্রাম। গ্রামটিতে কাকডাকা ভোরে প্রতিদিন ঘুম ভাঙে আলেয়া বেগম, বিউটি আক্তারদের। আর তখনই বাড়ির আঙিনায় সার তৈরির কাজে নেমে পড়েন তাঁরা। পরিবেশবান্ধব ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) উৎপাদন করছেন অন্তত অর্ধশত নারী।

প্রায় এক বছর আগে এ সার উৎপাদন শুরু করেন গ্রামের ৫২ জন নারী। এই সময় লাভের মুখ দেখেছেন বিউটি আক্তাররা। এসব নারী নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন কেঁচো সার উৎপাদনকেন্দ্রিক। গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আলেয়া বেগম বাড়ির আঙিনায় কেঁচো সার চালুন দিয়ে চালছেন। তাঁকে এ কাজে সহায়তা করছেন প্রতিবেশী এক নারী। 

আলেয়া বেগম বলেন, ‘ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে লাভ হচ্ছে ভালোই। এখন সংসারে নিজের উপার্জিত টাকা খরচ করে সম্মানিত বোধ করছি। সেই সঙ্গে ছেলেমেয়েদের প্রয়োজনে তাদেরও কিছু দিতে পারছি।’

নিজে কিছু করবেন ভেবে বাড়িতে গরু-ছাগল পালনের চেষ্টা করছিলেন খোদেজা বেগম। এর মধ্যে তিনি জেনেছেন, কৃষি উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্যদের ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে প্রশিক্ষণ দেয় কৃষি অফিস। তিনি বলেন, সেই প্রশিক্ষণ নিয়ে সার উৎপাদন শুরু করেন। এতে তিনি বেশ লাভবান। কারণ এক সময় গরুর গোবর ফেলে দেওয়া হতো। সেই ফেলে দেওয়া গোবরই এখন অর্থ উপার্জনের মাধ্যম।

গ্রামটিতে গত এক বছরে ৪০০ টনের বেশি সার উৎপাদন হয়েছে। প্রতি কেজি সার উৎপাদনে তাদের খরচ ৫-৬ টাকা। বিক্রি করেন ১২ থেকে ১৫ টাকা। তাঁদের উৎপাদিত সার রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কিনে নিয়ে যায় লোকজন।

কৃষি উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিউটি আক্তার জানান, গ্রামের গৃহবধূদের সমিতির মাধ্যমে কেঁচো সার তৈরির ধারণা দেয় স্থানীয় কৃষি অফিস। প্রশিক্ষণ ও কেঁচো সরবরাহ করে তারাই। বর্তমানে তাদের সমিতির অন্তত ৫২ জন্য সদস্য নিজ বাড়িতে এ সার তৈরি করছেন। এতে সবাই লাভবান। স্থানীয় কৃষি অফিস তাঁদের উৎপাদিত সার বিক্রিতেও সহযোগিতা করছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান বলেন, এ সার উৎপাদনে তেমন খরচ নেই। বাড়িতে পালিত গরুর গোবর অথবা সামান্য দামে গোবর কিনেই এ সার উৎপাদন করা যায়।

কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারে মাটি উর্বর হয়। বিষমুক্ত শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো সার খুবই কার্যকরী। একজন কৃষক এ সার একবার ব্যবহার করলে তিনি নিজ তাগিদেই এ সারের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

দৈনিক বগুড়া