লায়লা ডেভিস নামের ছোট্ট শিশুটি ব্রিটেনের সাফোকের গ্রেট ব্লেকেনহ্যামের বাসিন্দা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ছবি দেখে অনেকেই ভুবনবিখ্যাত জার্মান বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে তুলনা করছেন। অনেকে আবার বরিস জনসনের সংগেও তুলনা করছেন।
বিশ্বের বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে বুদ্ধিমত্তা বা এমন কোনো কারণে নয়। বরং শিশুটির বিখ্যাত বিজ্ঞানীর সঙ্গে মিল আছে চুলে। আইনস্টাইনের মতোই উস্কোখুস্কো চুল মাত্র দেড় বছর বয়সী লায়লার। বিরল এক রোকে আক্রান্ত সে। যে কারণেই চুলের এমন অবস্থা। যতই পরিপাটি করার চেষ্টা করুন না কেন সেই এলোমেলো হয়েই থাকবে।
পরিবারের সদস্যরা লায়লার জন্মের পরই লক্ষ্য করেছিলেন, মেয়েটার চুলটা কেমন যেন উস্কোখুস্কো। প্রথমে তেমন একটা পাত্তা দেননি লায়লার মা শার্লট। কিন্তু এক বছর হতে না হতে বুঝতে পারলেন, লায়লার চুল বাকিদের থেকে একদম আলাদা। আঁচড়ালেও সোজা ও পরিপাটি হয় না। অসম্ভব শুকনো, খোঁচা খোঁচা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় খুদেকে।
এরপরই জানা যায়, লায়লা এক বিরল রোগের শিকার। নাম আনকর্মটেবল হেয়ার সিন্ড্রোম বা ইউএইচএস। এতে চুল অসম্ভব শুষ্ক হয়ে যায়। খোঁচা খোঁচা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। চিরুনি হোক বা অন্য যে কোনো উপকরণ, কিছু ব্যবহার করেই চুল সোজা করা যায় না।
মেয়ের এমন বিরল অসুখের কথা জানতে পেরে প্রথম কয়েক দিন ভেঙে পড়েছিলেন মা শার্লট। কারণ এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। মার্কিন সরকারের জেনেটিক অ্যান্ড রেয়ার ডিজিজ ইনফরমেশন সেন্টার বলছে, রোগটি কিছু নির্দিষ্ট জিনের গঠনগত পরিবর্তনের ফলে হয়। প্রথম ইউএইচএস আক্রান্তের হদিস পাওয়া গিয়েছিল ১৯৭৩ সালে।
লায়লার এমন অসুখের খবরে পরিবারের সবাই ভেঙে পড়েন। তবে পরে তারা একটি অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করলেন। লায়লার চুল যত বড় হচ্ছে তত তার সঙ্গে একটা অদ্ভুত মিল পাওয়া যাচ্ছে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের। দুজনের চুলই অবিন্যস্ত। কেমন যেন দাঁড়িয়ে থাকে। ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসতেই ভাইরাল।
নেটিজেনদের একাংশের মধ্যে জোরাল চর্চা, আইনস্টাইন নাকি ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, কার সঙ্গে বেশি মিল খুদের? শার্লট এখন বলছেন, রোগটা অত্যন্ত বিরল। পুরো পৃথিবীতে মাত্র ১০০ জনের এই রোগ আছে। আবার এর কোনো চিকিৎসাও এখনো নেই। তাই তিনি ভেবেছিলেন, লায়লার এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। এজন্য লায়লাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে দেরি করেছেন।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন বয়ঃসন্ধির পর চুলের হাল অনেকটাই ভালো হয়ে যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে কোনো সমস্যাই থাকে না। একেবারে অন্য আর দশজন মানুষের চুলের মতোই স্বাভাবিক হয়ে যায় চুল।
সূত্র: এনডিটিভি
দৈনিক বগুড়া