শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যেসব লক্ষণে কিডনি জটিলতার ইঙ্গিত পাওয়া যায়

যেসব লক্ষণে কিডনি জটিলতার ইঙ্গিত পাওয়া যায়

শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর অন্যতম কিডনি। যা শরীর থেকে বর্জ্য পরিস্রুত করতে কাজ করে। কিডনির সমস্যা মানুষকে প্রাণের ঝুঁকিতেও ফেলে দিতে পারে। তাই কিডনি নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা উচিত। মুশকিল হলো, অনেক ক্ষেত্রেই কিডনির সমস্যার উপসর্গগুলো মৃদু হয়ে থাকে। তাই অসুখ গভীর না হলে বুঝে ওঠা যায় না।

অনেক সময় দেখা যায়, কোনো শারীরিক আঘাত বা উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়াবেটিসের মতো রোগের কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার কারণে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলোকে বের হতে পারে না। ফলে শরীরে টক্সিন তৈরি হতে শুরু করে। কিডনি ঠিক আছে কি না জানতে কিছু সাধারণ লক্ষণের বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার।

গোড়ালি ও পা ফোলা

তলপেটে দুটি মটরশুঁটি আকৃতির অঙ্গ অর্থাৎ কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত সোডিয়াম পরিস্রুত করতে সাহায্য করে। কিন্তু কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে শরীরে সোডিয়াম জমা হতে শুরু করে। যার ফলে গোড়ালি এবং পা ফুলে যায়। এ শারীরিক অবস্থাটিকে এডিমা বলা হয়। আবার কারও কারও চোখের এবং মুখের মতো শরীরের অন্যান্য অংশে ফোলাভাব দেখা যায়। তবে কিডনির সমস্যায় প্রাথমিকভাবে হাত, পা, গোড়ালিতে প্রভাব পড়ে।

দুর্বলতা এবং ক্লান্তিভাব

সাধারণত সবসময় ক্লান্তি এবং দুর্বল অনুভব হওয়া লিভারের সমস্যার উপসর্গ। আবার কিডনির সমস্যা গুরুতর হয়ে গেলেও রোগী অনেক বেশি ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব করেন। এমনকি রোগী সামান্য বাড়ির কাজ করে কিংবা হাঁটার সময়েও সহজেই ক্লান্ত হয়ে যান৷ এক্ষেত্রে কিডনি ঠিক মতো কাজ না করায় রক্তে টক্সিন তৈরি হওয়ার কারণেই এ ধরনের সমস্যা হতে দেখা যায়।

খিদে কমে যাওয়া

শরীরে টক্সিন ও বর্জ্য জমে যাওয়ায় খিদে কম পায় এবং ধীরে ধীরে পরে রোগীর ওজন কমে যায়৷ সকালের দিকে বমি হওয়ায় খিদে কম পাওয়ার আরও একটি কারণ হতে পারে। তাই সব সময় পেট ভর্তি রয়েছে অনুভব হলে তা কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

ঘন ঘন প্রস্রাব

একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ সারা দিনে ৬-১০ বার মূত্র ত্যাগ করেন। এর চেয়ে বেশি মূত্রের বেগ পেলে তা কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। কিডনির সমস্যা থাকলে কেউ খুব কম বা ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ করতে পারেন। এমনকি অনেকের ক্ষেত্রে মূত্রের সঙ্গে রক্ত কিংবা বেশি ফেনা বের হয়। এক্ষেত্রে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রক্তের কোষগুলো প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে শুরু করে।

শুষ্ক ত্বক এবং চুলকানি

অন্যান্য লক্ষণগুলোর সঙ্গে শুষ্ক ত্বক এবং চুলকানি অ্যাডভান্স পর্যায়ের কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। কিডনি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে না পারলে এবং শরীরের বর্জ্য রক্তে জমা হতে শুরু করলে ত্বকে চুলকানি, শুষ্কতা এবং দুর্গন্ধ হতে পারে। কিডনির সমস্যা থেকে হাড়ের অসুখও হতে পারে।

প্রয়োজন সচেতনতা

কিডনির সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করলে তখনই প্রতিরোধ করা যায়, যখন সময় মতো উপসর্গগুলো শনাক্ত হয়। উচ্চ রক্তচাপ, সুগার এবং কোলেস্টেরল বেশি থাকলে কিডনির সমস্যা হওয়ার খুব বেশি ঝুঁকি থাকে। তাই যাদের এসব রোগ রয়েছে তাদের অন্যান্য অঙ্গগুলো ঠিক মতো কাজ করছে কি না জানার জন্য নিজেদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা এবং বছরে অন্তত একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করতে এবং চিকিৎসা শুরু করতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সাহায্য করে।

দৈনিক বগুড়া