মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২৫ বছর পর চীনা নববর্ষ অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

২৫ বছর পর চীনা নববর্ষ অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

এক চতুর্থাংশ শতাব্দীর পর, চাইনিজ নববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। রোববার (২২ জানুয়ারি) পাকাতান হারাপান (পিএইচ) চেয়ারম্যান লাল বাটিকের পোশাক পরে উইসমা এমসিএ-তে আসেন। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ড. ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল।

তার আগমনে, আনোয়ারকে এমসিএ সভাপতি উই কা সিওং এবং অন্যান্য শীর্ষ এমসিএ নেতারা স্বাগত জানান। আনোয়ার সবাইকে ‘শুভ চীনা নববর্ষ’ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং আমন্ত্রণের জন্য উইকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী, পিকেআর সভাপতিকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন উমনো সভাপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি, উমনোর ডেপুটি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাসান এবং পিকেধারএর তথ্য প্রধান ফাহমি ফাদজিল। উইসমা এমসিএ-তে আনোয়ারের শেষ সফর ছিল ১৯৯৮ সালের শুরুর দিকে। সেই বছরের পরের দিকে, তাকে দুর্নীতি ও যৌনতার অভিযোগে মন্ত্রিসভা এবং উমনো থেকে বরখাস্ত করা হয়।চীনা নববর্ষকে ঘিরে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন এলাকার সব দোকানপাট, বাজার, দাফতরিক এবং আবাসিক ভবন বিভিন্ন সাজে সাজানো হয়েছে। সাজের বৈচিত্রে প্রাধান্য পেয়েছে লাল রঙের গোলাকৃতির লণ্ঠন

আনোয়ার ইব্রাহিম সাংবাদিকদের বলেন, ২৫ বছর পর (উইসমা) এমসিএ-তে ফিরে আসতে পেরে এবং পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে তিনি খুব খুশি।

তিনি বলেন, আমাকে উমনো থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং তারপর কারারুদ্ধ করা হয়েছিল, তাই আমি কোনো (এমসিএ) ইভেন্টে যোগ দিতে পারিনি। কিন্তু এখন আমি পারি। এমসিএ নেতাদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব কয়েক বছর ধরে মতামতের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও এখনও দৃঢ়।

জাহিদ বলেন, ২৫ বছর পর উইসমা এমসিএ-তে আনোয়ারের উপস্থিতি নতুন রাজনৈতিক দৃশ্যপটে একটি ভালো লক্ষণ। এমআইসির ডেপুটি প্রেসিডেন্ট এম সারাভানান, বারিসান ন্যাশনাল (বিএন) সেক্রেটারি-জেনারেল জাম্বরি আবদ কাদির, প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) সভাপতি তিয়ং কিং সিং এবং মালয়েশিয়ায় চীনের রাষ্ট্রদূত উয়াং ইউজিং এই উৎসবে উপস্থিত ছিলেন।

আনোয়ার এবং অন্যান্য অতিথিরা একটি সিংহ নৃত্য পরিবেশনের সঙ্গে আপ্যায়ন করার আগে সমৃদ্ধি টোস্টে (ইয়েং গান) অংশ নেন। গত এক সপ্তাহ ধরে এ উপলক্ষে মালয়েশিয়ার প্রতিটি প্রদেশ সেজেছে নতুন সাজে। চীনে এ উৎসবকে ‘ছুন জিয়ে’ বলা হলেও ইংরেজিতে তা ‘স্প্রিং ফেস্টিভাল’ নামে পরিচিত।

চীনা নববর্ষকে ঘিরে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন এলাকার সব দোকানপাট, বাজার, দাফতরিক এবং আবাসিক ভবন বিভিন্ন সাজে সাজানো হয়েছে। সাজের বৈচিত্রে প্রাধান্য পেয়েছে লাল রঙের গোলাকৃতির লণ্ঠন। ‘লাল রঙ’ চীনে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। এই রঙ আনন্দ, শান্তি, সুখ ইত্যাদির প্রতীক।

‘চীনা নববর্ষে, একটা নতুন প্রাণিকে ওই বছরের প্রতীক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এভাবে ১২ বছরে ১২ প্রাণিচক্র হিসেবে প্রতীক হয়ে ওঠে। ২০২৩ সাল ‘খরগোশবর্ষ’। ‘খরগোশবর্ষ’ সুখ সমৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসবে এ প্রত্যাশায় মালয়েশিয়ায় চীনা নাগরিকরা নববর্ষের রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে উৎসব পালন করে। উপহার হিসেবে বড়রা ছোটদের লাল রঙের খামে দেন ইউয়ান (চীনা মুদ্রা)। যা অনেকটা ঈদ বকশিসের মতো।

এদিকে চীনা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমদ শাহ ও রানি টুঙ্কু আজিজাহ আমিনাহ মায়মুনাহ ইস্কান্দারিয়া শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারা আশা করেন চীনা নববর্ষ উদযাপন মালয়েশিয়ার বহুজাতিক সমাজের মধ্যে সহনশীলতা বৃদ্ধি করবে।

দৈনিক বগুড়া