লিবিয়ায় শক্তিশালী ঝড়, বৃষ্টি এবং বন্যায় দুই হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পূর্ব লিবিয়ার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রবল ঝড় ও বৃষ্টির পর দেরনা শহরে ভয়াবহ বন্যায় কমপক্ষে দুই হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া আরও কয়েক হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
পূর্ব লিবিয়া অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে থাকা লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (এলএনএ) মুখপাত্র আহমেদ মিসমারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেরনার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
এর আগে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) শুরুর দিকে ওই অঞ্চলের রেড ক্রিসেন্ট জানায়, দেরনায় নিহতের সংখ্যা ১৫০। সে সময় জানানো হয় যে, মৃতের সংখ্যা আড়াই শতাধিকে পৌঁছাতে পারে। তবে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) লিবিয়ার বেনগাজি, সুসে, আল বায়দা, আল মার্জ ও দেরনা শহরে আঘাত আনে ঘূর্ণিঝড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ড্যানিয়েল আঘাত হানার পর গাড়ির ছাদে ও উঁচু জায়গায় বসে আছেন স্থানীয়রা। তাদের সামনে কোমর সমান বন্যার পানি।
স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম অলমোস্তবালের ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যায়, বন্যার পানিতে একাধিক গাড়ি ভেসে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, প্রায় ১০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। রাস লানুফ, জুয়েতিনা, ব্রেগা ও এস সিদরা, লিবিয়ার চারটি বড় তেল বন্দরই শনিবার সন্ধ্যা থেকে তিনদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে গ্রিসে আঘাত হানার পর ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল রোববার ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করে। লিবিয়ায় শক্তিশালী এই ঝড়ের প্রভাবে রাস্তাঘাট ভেসে গেছে এবং দেরনায় ভবন ধসে পড়েছে। লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজিসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকার বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেরনার বাসিন্দা সালেহ আল ওবাইতি বলেন, তিনি তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোনো রকমে পালাতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, লোকজন ঘুমিয়ে ছিল। ঘুম থেকে জেগেই তারা দেখেন তাদের চারপাশে পানি।
আহমেদ মোহাম্মদ নামের অপর এক বাসিন্দা বলেন, আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। যখন ঘুম থেকে উঠলাম আমরা দেখলাম যে, আমাদের বাড়ির আশেপাশে পানি। আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেখানকার পানি ১০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছেছে।
দৈনিক বগুড়া