সংগৃহীত
আপনি কি জানেন, প্রতিদিনের কিছু সাধারণ অভ্যাসই হতে পারে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণ? মদ্যপান, ওজন নিয়ন্ত্রণহীনতা কিংবা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এড়িয়ে যাওয়া– এই সামান্য বিষয়গুলোই বাড়িয়ে দিতে পারে ভয়ংকর এই রোগের আশঙ্কা। কিন্তু কিছু সচেতনতা আর জীবনযাপনে সামান্য পরিবর্তন আনলেই কমানো সম্ভব এই ঝুঁকি। কীভাবে? জানালেন ভারতের বেঙ্গালুরুর লিভার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বসন্ত মহাদেবপ্পা।
চিকিৎসকের ভাষায়, ক্যান্সার হওয়ার কারণ একেবারে নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও কিছু নির্দিষ্ট বিষয় আছে, যেগুলোকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় ‘ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান’। লিভার ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও এমন কয়েকটি উপাদান রয়েছে, যা অবহেলা করা বিপদের কারণ হতে পারে।
অনেকেই নিয়মিত জীবনযাপনের সঙ্গে মদ্যপানকে ‘স্বাভাবিক অভ্যাস’ মনে করে নেন। কেউ আবার সামান্য ব্যথা বা ক্লান্তিতেই নির্বিচারে ব্যথানাশক ওষুধ খান। এই অভ্যাসগুলোই নীরবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে লিভারকে, বাড়িয়ে দিচ্ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি।
ভারতীয় চিকিৎসক বসন্ত মহাদেবপ্পা নিজ ইনস্টাগ্রামের এক পোস্টে জানিয়েছেন, লিভার সুস্থ রাখতে এবং ক্যান্সারের আশঙ্কা কমাতে এই পাঁচটি বিষয় মেনে চলা জরুরি–
১. হেপাটাইটিস বি টিকা নেওয়া
লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধে হেপাটাইটিস বি টিকা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শুধু শিশু নয়, যেসব প্রাপ্তবয়স্ক এখনো এই টিকা নেননি, তারাও দ্রুত টিকা নিয়ে নিন।
২. মদ্যপান একেবারে বন্ধ করা
চিকিৎসকের মতে, মদ লিভারের জন্য বিষের মতো। উৎসব-অনুষ্ঠানে সামান্য পরিমাণেও মদ্যপান লিভারের ক্ষতি করে। তাই ঝুঁকি এড়াতে মদ্যপান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে গেলে লেবুর রস বা ডাবের পানি দিয়েই তৃষ্ণা মেটান।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
অতিরিক্ত ওজন লিভারের চারপাশে চর্বি জমিয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা ও সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ডায়েট ও ব্যায়ামের সঠিক ভারসাম্যই পারে মারণরোগের ঝুঁকি কমাতে।
৪. ধূমপান ছেড়ে দেওয়া
ধূমপান শুধু ফুসফুস নয়, লিভারেরও ক্ষতি করে। তাই লিভারকে ক্যান্সারের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ধূমপান ত্যাগ করতেই হবে। চিকিৎসকের ভাষায়, ‘ধূমপান ছাড়া সহজ নয়, তবে অসম্ভব কিছুও নয়।’
৫. নিয়মিত লিভার পরীক্ষা করা
বছরে অন্তত একবার লিভার ফাংশন টেস্ট করানো উচিত। পরিবারে যাদের লিভারজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ছয় মাস পরপর এই পরীক্ষা আরও নিরাপদ। একটি সাধারণ রক্ত পরীক্ষা-ই হয়তো আপনাকে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধের শুরু সচেতনতা থেকেই। তাই দেরি না করে এখনই জীবনযাপনে আনুন প্রয়োজনীয় পরিবর্তন। কারণ, সুস্থ লিভার মানেই সুস্থ জীবন।
সূত্র: ঢাকা পোষ্ট



















