বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাহালুর ইউএনও বিশেষ ভূমিকা

সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাহালুর ইউএনও বিশেষ ভূমিকা

সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বগুড়ার কাহালু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাছুদুর রহমানের ভূমিকা সর্ব মহলে প্রসংশিত। তবে যারা অবৈধ ও অন্যায় কাজে ব্যর্থ হচ্ছেন তারাই মাঝে-মধ্যে সমালোচনা করাসহ  এমন কিছু উদ্ভট গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করেন। বিগত দু-বছর ইউএনও মাছুদুর রহমানের সাহসী ভুমিকায় এখন অনেকই উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অন্যায় আবদার করতে সাহস পান-না।

ইউএনও মাছুদুর রহমানের জন্য এখানে ভালো মানুষের কোন সমস্যা হয়না। সবচেয়ে বেশী সমস্যায় রয়েছে ভূমি দস্যু, বালু দস্যু, সরকারি খাস জায়গা, জলমহাল অবৈধ দখলকারী, জুয়ারি, গুজব রটানোকারী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী এবং মানুষ ও সমাজের ক্ষতিসাধনকারীরা।  সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী ও দায়িত্বশীল মানুষকে নিয়মনীতির ছকে বাঁধতে ইউএনও মোঃ মাছুদুর রহমান সর্বদায় সচেষ্ট। নীতিহীন কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখতে ও ইতিবাচক কাজে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে তার প্রাণপণ চেষ্টা।

২০১৯ সালের ২১ মে অত্র উপজেলায় তিনি যোগদান করেছেন। তার দু-বছরের কর্মযজ্ঞে উপজেলাবাসী পেয়েছেন অনেক সুফল। কথায় আছে ইচ্ছে থাকলে উপায় একটা বের হবেই। তেমনি ন্যায় সঙ্গত কাজে ইউএনও মোঃ মাছুদুর রহমানের মধ্যে রয়েছে সেই ইচ্ছে শক্তি। তার ইচ্ছে শক্তি দিয়েই উপজেলাবাসীর মঙ্গলের জন্য অনেক ভালো ভালো কাজ করেছেন। যত বড়ই প্রভাবশালী হোক-না কেন, গত দু-বছরে কেউ কোন অন্যায় কাজের আবদার নিয়ে তার সামনে দাঁড়াতে পারেনি। আর যারা ভালো কাজের জন্য তার কাছে গেছেন, আগে তাদেরকে সার্বিক সহযোগীতা করেছেন।

উপজেলা প্রশাসনের কাজ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করবার জন্য তিনি কখনো বিনয়ী আবার কখনো কঠোর হয়েছেন। মোট কথা তার কাছে ভালো কাজের মুল্য আছে, আর অসঙ্গতিপূর্ণ কাজে তার কাছে কোনই মুল্য নেই। সরকারি সিদ্ধান্ত মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে সব সময় তিনি থাকতেন সচেষ্ট। তিনি যখন প্রথম এখানে যোগদান করেন, তখন তিনি উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নির্দেশনা দেন, সবাই যাতে সরকারি নিয়মনীতি মেনে নিদ্ধারিত সময়ে অফিসে হাজির হন। নিজ নিজ দপ্তরে সবাই যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে সরকারি দপ্তরে আসা মানুষের সেবা ঠিকমত করেন। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কাজের জন্য এসে, কোন মানুষ যাতে হয়রানী ও ভোগান্তির শিকার না হন। জনগনের ট্রাক্সের টাকায় বেতন নিয়ে সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারী যাতে কোন মানুষের সাথে প্রভুসূলভ আচরণ না করেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় এবং অন্যায়ভাবে কেউ যাতে কোন সুযোগ-সুবিধা না নিতে পারেন,  তার জন্যেও তিনি উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীকে সতর্ক করে দেন। নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে অতীতে অত্র উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা সরকারি খাস জায়গা ও জলমহাল কেউ দখল মুক্ত করতে পারেননি।

ইউএনও মোঃ মাছুদুর রহমান গত দু-বছরে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের দূঢ়তার সাথে দমন করে বেশ কিছু সরকারি জায়গা ও জলমহাল দখল মুক্ত করেছেন। দখল মুক্ত জায়গাগুলোতেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি অসহায় গৃহহীন মানুষের স্বপ্নের আবাসনের ব্যবস্থা তিনি সুষ্ঠভাবে করে দিয়েছেন। কয়েকদিন আগেও তিনি গৃহহীনদের আবাসনের জায়গা নিদ্ধারণ করতে গিয়েছিলেন কালাই ইউনিয়নে। সেখানে কতিপয় মানুষের অবৈধ দখল রাখা সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করে গৃহহীনদের জন্য আবাসনের জায়গা নিদ্ধারণ করেছেন। অতীতে প্রভাবশালীদের প্রতিবন্ধকতা ও কতিপয় ব্যক্তিরা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গার কারণে, এখানে বেশ কয়েকটি সরকারি জলমহাল কেউ ইজারাই নিতনা। আবার কোন কোন হাট-বাজারও ইজারা হতোনা। তিনি এখানে আসার পর শতভাগ হাট-বাজার ইজারা প্রদান ও অতীতের চেয়ে অনেক বেশী সরকারি জলমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে।

যারফলে এখানে ভুমি কর থেকে শুরু করে সরকারি রাজস্ব আয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন স্থানে নয়নজুলির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে, তা খননের মাধ্যমে অনেকটা পানি নিস্কাশ্বনের পথ পরিস্কার করা হয়েছে। বর্ষায় যাতে চাষিরা ক্ষতির মুখে না পড়েন তার জন্য উপজেলার কাইট মাঠ থেকে পাঁচপীরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খাড়িয়া খনন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো ইউএনও মাছুদুর রহমানের। বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে তার নিরপেক্ষতায় ভোটার, বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থী কেউ তার সমালোচনা করতে পারেনি। মাদক, বাল্য বিয়ে, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিরোধী কর্মকান্ড থেকে যাতে সবাই বিরত থাকে সেই লক্ষে তিনি আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন।

দেশে করোনার সংক্রামণ শুরু হওয়ার পর থেকে, উপজেলার মানুষকে করোনা মুক্ত রাখার জন্য দিনরাত সমান কাজ করেছেন তিনি।  বিভিন্নভাবে প্রচার করে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। করোনার ভয়াল থাবা থেকে তিনি মানুষকে বাঁচাতে সব ধরণের চেষ্টা এখনো করে যাচ্ছেন। করোনা যুদ্ধে, সামনের সারির এই যোদ্ধা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে শিশুপুত্রসহ তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনাকালীন সময়ে কর্মহীন মানুষের জন্য সরকারি সহায়তা প্রদানে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনিয়মের খবর পাওয়া গেলেও এখানে এই ধরণের সহায়তা প্রদানে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়নি। করোনা মুহুর্তে অভাবে পড়া যেসকল মানুষ মান-সম্মানের ভয়ে কারো কাছে সাহায্যের হাত বাড়ায়নি, গোপনে রাতের আধারে সেই সকল মানুষকে তিনি আন্তরিকভাবে সহায়তা দিয়েছেন।

করোনায় কোন মানুষের মৃত্যু হলে সেই মানুষের দাফন-সৎকারে নিকট আত্নীয়-স্বজন এগিয়ে না এলেও ইউএনও মোঃ মাছুদুর রহমান নিজেই করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন ও সৎকারে অংশ নিয়েছেন। কাহালু উপজেলাবাসীর মঙ্গলে তিনি এই করোনাকালীন সময়ে দিনরাত সমান করে মানুষকে করোনা মুক্ত রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি কখনো মানুষকে বিনয়ের সাথে বুঝানোর চেষ্টা করেন আবার বার বার বুঝানোর পরও মানুষ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করলে তখন তিনি অনেকটা কঠোর হয়ে আইন প্রয়োগ করেন। সম্প্রতি গৃহহীনদের আশ্রয় প্রকল্পের কাজে দেশের বিভিন্ন স্থানে সমালোচনা হলেও অত্র উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠভাবে হওয়ায় এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিষয়ে কোন ধরনের সমালোচনা কেউ করতে পারেনি। যারফলে ইউএনও মাছুদুর রহমানের সততা, কর্ম দক্ষতা ও সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আন্তিরিকতায় উপজেলাবাসী মুগ্ধ। 

দৈনিক বগুড়া