বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুর বড়বিলার জলে পাতি সরালির মেলা

শেরপুর বড়বিলার জলে পাতি সরালির মেলা

দল বেঁধে বিলের জলে সাঁতরে বেড়াচ্ছে বাদামি রঙের হাঁস। বাদামি এই হাঁসের নাম সরালি বা পাতি সরালি। একসঙ্গে উড়তে থাকলে মনে হয় ধূসর-বাদামি ঢেউ। বগুড়ার শেরপুরে  এই প্রথম কোন বিলে এমন পাতি সরালির ঝাঁক দেখা গেল। সরালিকে ‘পরিযায়ী’ বলে ভুল করে কেউ কেউ। তবে এটি পরিযায়ী পাখি নয়। শীত মৌসুমে এই জাতের পাখি দিঘি-জলাশয়ে দল বেঁধে বেড়ায়।

বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়ন এর 'বড়বিলা' নামক বিলের নতুন অতিথি এবার পাতি সরালি। বিলের ধারে দাঁড়ালে প্রকৃতির অপরূপ মেলবন্ধন মনে মুগ্ধতা এনে দেয়। এই প্রথম এই বিলে এমন পাতি সরালির ঝাঁক দেখা গেল।পাতি সরালি ছাড়াও এই বিলে প্রায় ২০-২৫ প্রজাজির পাখি দেখা যায়। এর মধ্যে পাতি তিলি হাঁস, বালিহাঁস, জলপিপি, জলমূয়র, পাকড়া মাছরাঙা, পাতিমাছরাঙা, মাছরাঙা, সাপপাখি, পানকৌড়ি, শামুকখোল, হট্টিটি, শালিক, লাটোরা উল্লেখযোগ্য।

এই বিলের আয়তন বর্ষা মৌসুমে অনেক বেশি থাকলেও গ্রীষ্ম মৌসুমে প্রায় ১৫ একরের মত থাকে এবং পানির গভীরতা ৩-৫ ফিট পর্যন্ত থাকে। বিকেল হলেই এখন পাখি দেখতে ভীড় করছে অনেকেই। এছাড়াও মাছ ধরতে দেখা যায় দু-একজন কে। বিলটিতে গত বছরের পর এবছর জুন মাসে তুলনামূলক মা পাখি সংখ্যায় অনেক বেশি এসেছে এবং দুই মাস আগে থেকে বংশবিস্তার শুরু করেছে। এখানে বর্তমানে পাখির সংখ্যা আনুমানিক প্রায় দশ হাজার।

বিলটিতে পাখিসহ বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা রক্ষায় সচেতনতা মূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে কাজ করছে পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থা শেরপুর,বগুড়া। এই বিলে পতিসরালি ঝাঁক বেঁধে গত বছর থেকে আসলেও তাদের নিরাপত্তায় শুধু মাত্র সেচ্ছাসেবী পরিবেশবাদী সংগঠন Organisation for Environmental Defense of Sherpur- OEDS কাজ করছে। সম্পূর্ণ বিলটি কয়েকজন ব্যক্তির, ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা। এটা নির্মানাধীন ভাস্কার এগ্রো পার্ক। এখানে ৬-৭ মাস আগে হাসের খামার ছিল। এখন খামার নাই। তাই নির্জীব জায়গায় পাতি সরালি বংশবিস্তার শুরু করেছে।

পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সভাপতি সোহাগ রায় সাগর জানান , বিলটিতে গত বছরের পর এবছর জুন মাসে তুলনামূলক মা পাখি সংখ্যায় অনেক বেশি এসেছে এবং দুই মাস আগে থেকে বংশ বিস্তার শুরু করেছে।এখানে বর্তমানে পাখির সংখ্যা আনুমানিক প্রায় দশ হাজার। আমরা কিছু লিপলেট ও ব্যানার লাগিয়ে লোকজনকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। তাছাড়া উপজেলার অন্যান্য বিলে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পাখিদের আবাসস্থল নষ্ট হয়ে গেছে। যদি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয় তাহলে অত্র এলাকায় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে সৃষ্টি ও পরিবেশ সংরক্ষণে ব্যপকভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করা যাবে।

তিনি আরো জানান, নিকটস্থ নির্মানাধীন ভাস্কার এগ্রো পার্ক এর ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন ও স্থানীয় ব্যক্তিদের দেয়া তথ্যমতে, এই বিলে মাঝে মাঝে বন্দুকধারী পাখি শিকারী ছাড়াও রাতে চোরাশিকারি দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও বিলের ফসলি জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক এর দ্বারা ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে।

দৈনিক বগুড়া