বগুড়ায় এবারই প্রথম একশ টাকা ব্যাংক ড্রাফটে পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে ৭১ জন চাকরী পেয়েছেন। এদের মধ্যে ৬০ জন ছেলে ও ১১জন মেয়ে। বিনা টাকায় চাকরী পেয়ে তারা সবাই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এসব চূড়ান্ত প্রার্থীর অভিভাবকরা কখনও বিশ্বাসই করতে পারেনি তাদের সন্তানদের টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরী হবে।
জানা যায়, সারাদেশের ন্যায় বগুড়া জেলাতেও পুলিশের "ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে'' ৭ টি ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার রাতে পুলিশ লাইন্সে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন ও নির্বাচিত ৭১জনকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এছাড়া অপেক্ষমাণ তালিকায় পুরুষে ৯জন এবং নারীদের ২ জনকে রাখা হয়েছে। নির্বাচিত সদস্যদের মেডিকেল রিপোর্টে যদি কেও বাদ পরে তাহলে সেই তালিকা থেকে বেশি মার্ক পাওয়াদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নেওয়া হবে বলে পুলিশ সুপার জানান।
গত ১৬ নভেম্বর একশ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করে বগুড়া পুলিশ লাইনে ২ হাজার ৮৪০জন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন ধাপ শেষ করে ৬৩৯ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ২০৪পাশ করেন। এদের মধ্যে পুরুষ ১৮৭জন এবং বাকি ১৭জন নারী। পরে মৌখিক পরীক্ষা শেষে ৭১জনকে চূড়ান্ত ও ১১জনকে অপেক্ষমাণ রেখে ফল প্রকাশ করা হয়।
বগুড়া এরুলিয়া এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আমিনুর ইসলামের মেয়ে রানী খাতুন নারীদের মধ্যে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। রানী খাতুন জানান, মাত্র ১০৩ টাকা খরচ করে পুলিশের চাকরি পাব কল্পনাও করি। পুরো বিষয়টি স্বপ্নের মত লাগছে।
শেরপুর উপজেলার সাউদিয়া পার্ক এলাকার অতিদরিদ্র ঘরের মেয়ে সাগরিকা মাহাতো। তার বাবা চাউল কলের শ্রমিক। চূড়ান্তভাবে পুলিশে নির্বাচিত হওয়ায় সাগরিকা জানান, তিনবোনের সংসার। খব কষ্ট করে বাবা আমাদের সংসার চালান। আজ এভাবে পুলিশের মত একটা বাহিনীতে কাজ করার সুযোগ পাব তা কখনও ভাবতে পারিনি। এখন আমার পরিবার বুক উঁচু করে বাঁচতে পারবে।
পুরষদের মধ্যে মেধাতালিকায় প্রথম হওয়া আশিকুর রহমান বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারিনি আমার একশ টাকায় পুলিশে চাকরী হবে। আমার ধারনা ছিল যদি আমি পরীক্ষাতেও পাশ করি তাহলে হয়তো ঘুষ দিতে হবে। কিন্তু আমার ধারনাকে ভুল প্রমাণ করে কোন ঘুষ ছাড়াই পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদ পাশ করলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী, সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম, পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন, সকল থানার ওসি ও জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।
দৈনিক বগুড়া