বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাদাম চাষে ধুম পড়েছে বগুড়ার চরাঞ্চলে

বাদাম চাষে ধুম পড়েছে বগুড়ার চরাঞ্চলে

সার প্রয়োজন হয় না, সেচ লাগে খুবই কম এবং নিড়ানী ছাড়াই চাষে অধিক লাভ হওয়ায় ‘চরাঞ্চলের রুপা’ খ্যাত বাদাম চাষে ঝুঁকছেন বগুড়ার কৃষকরা। সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার কাজলা, ধারা বর্ষা, বোহাইল, ছোনপচা, ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ী চরসহ দুই উপজেলার চরগুলোতে বাদাম লাগাতে ব্যস্ত কৃষকরা।

চরের মাটিতে জমি তৈরি করে সেখানে বাদাম বপন করছে তারা। কেউবা দিনমজুর নিয়ে, কেউবা পরিবার পরিজন নিয়ে বাদাম চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সারিয়াকান্দীর উপজেলার ছোনপচা চরের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, “খুব কম খরচেই বাদাম চাষ করা যায়। চাহিদাও বেশি, দামও বেশি। বাজারে নিতে হয় না। বিভিন্ন জেলা থেকে এসে পাইকাররা জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, “চরাঞ্চলের মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা লাভের পথ হিসেবে এখন বাদাম চাষই প্রাধান্য পাচ্ছে। বাদামকে আমরা ‘চরের রুপা’ বলি।” ধুনটের শহড়াবাড়ী চরের সামছুদ্দিন বলেন, “চরের মাটিতে বিঘা প্রতি প্রায় সাত মণ বাদাম উৎপাদন হয়। প্রতি মণ বাদাম গত বছর জমি থেকে বিক্রি করেছি ছয় হাজার টাকা দরে।”

একই চরে আবুল হোসেন, জহুরা খাতুন এবং তার ছোট দুই সন্তানকে বাদাম বুনতে দেখা যায়। আবুল হোসেন বলেন, “বাদাম শুধু বুনেই চলে যাওয়া যায়। নিড়ানি, পানি, সারও দিতে হয় না। অন্য ফসলে খরচ করতে হয়। তাই এবার ২০ শতক জমিতে বাদাম বুনলাম।”

বগুড়া কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক দুলাল হোসেন জানান, বগুড়ায় দিন দিন বাদাম চাষ বাড়ছে কম খরচে অধিক লাভের জন্য। এবার সারিয়াকান্দী ও ধুনট উপজেলার চরে এক হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন।

সারিয়াকান্দী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ জানান, বেলে-দোআঁশ মাটিতে বাদাম চাষ ভালো হয়। চরের মাটি এই ফসলের জন্য উপযোগী। তাই সারিয়াকান্দী এবং ধুনটের চরাঞ্চলে বাদামের ফলন ভালো হয়। এসব চরে স্থানীয় জাতের বাদাম চাষ হয়ে থাকে।

এই কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, যাদের হৃদরোগ আছে তাদের জন্য বাদাম খুবই প্রয়োজনীয় খাবার। বাদাম মানুষের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) দূর করতে এবং যা ভালো (এইচডিএল) তা বাড়াতে খুবই উপকারী।

দৈনিক বগুড়া