বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় খাল-বিল ও জলাশয়ে চাষ করা হচ্ছে পানিফল

বগুড়ায় খাল-বিল ও জলাশয়ে চাষ করা হচ্ছে পানিফল

বগুড়ায় খাল-বিল ও জলাশয় জুড়ে চাষ হচ্ছে পানিফল। প্রতি বছর যেমন চাষ বাড়ছে, তেমনি বিক্রিও বেড়েছে। কম খরচে ভালো ফলন ও দাম পেয়ে কৃষক খুশি। জেলা শহর ছাড়াও উত্তরের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে এ পানিফল। লাভজনক হওয়ায় এ জেলায় পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের।

পানিতে জন্মে বলে পানিফল, লতাপাতার মতো জলাশয়ে ভাসতে দেখা যায় পানিফলের গাছ। নিচু জমি এবং বিল-জলাশয়ে মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়। অনেকে মাছের সঙ্গে মিশ্রভাবেও চাষ করে থাকেন। ফল দেখতে অনেকটা সিঙারার মতো বলে স্থানীয়ভাবে সিঙারা নামে পরিচিত। পানিতে ভরপুর এবং প্রচুর খনিজ উপাদান পানিফলে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র-আশ্বিন পর্যন্ত চারা লাগানো যায়। চারা লাগানোর ২ থেকে আড়াই মাস পর ফল তোলা যায়। প্রতি গাছ থেকে ৩ থেকে ৪ বার ফল তোলা যায়, যা পৌষ মাস বা ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া যায়। এ ফলের কোনো বীজ নেই, মৌসুম শেষে পরিপক্ব ফল থেকে আবারও চারা গজায়, সে চারা পরে জলাশয়ে লাগানো হয়। আগামী বছরও আরো বেশি জলাশয়ে এ ফলের চাষ হবে কৃষি বিভাগ আশা করছে।

গাবতলীর খইলশাকুড়ি বিলে বেলাল হোসেন, সোহেলসহ সাতজন প্রতি বছরই পানিফল চাষ করে থাকেন। সার ও ওষুধ দিয়ে পানিফল চাষ করে থাকেন। যে সময় এ ফলের চাষ করা হয়, তখন কৃষকের হাতে কাজ কম থাকে। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই তারা এ ফল চাষ করেন। সাবগ্রাম-বরিয়া এলাকায় চাষ করেছেন আব্দুস সামাদ, বক্করসহ কয়েকজন। তারা জানান, নিচু জমি হওয়ায় এখানে ফসল হয় না, তাই প্রতি বছর তারা এখানে পানিফল চাষ করে থাকেন। তাদের জমি থেকেই ব্যবসায়ীরা ফল কিনে নিয়ে যায়। ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চেলোপাড়া ব্রিজের পাশে চাষিবাজার এলাকায় বাজার বসে।

ব্যবসায়ী আবু বক্কর জানান, আশ্বিন থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত এ বাজারে পানিফল বিক্রি হয়ে থাকে। ভরা মৌসুমে প্রতিদিন ২০০ মণ পানিফলের কেনাবেচা হয় এ বাজারে। বাজারে প্রতি মণ পানিফল পাইকারি ৫০০ থেকে ১২০০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) মো. এনামুল হক জানান, বগুড়া থেকে পানিফলসহ চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছে। আগামীতে জেলার অন্য উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।

দৈনিক বগুড়া