বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফুলচাষে শহিদুলের মাসে আয় ৭০ হাজার টাকা

ফুলচাষে শহিদুলের মাসে আয় ৭০ হাজার টাকা

ভগ্নিপতির বাড়ি ঝিনাইদহে। তিনি একজন ফুল কারবারি। চাষও করেন। তার দেখে উদ্বুদ্ধ হন বগুড়ার শহিদুল। কয়েক বছর আগে নিয়মিত ফসল চাষ বাদ দিয়ে শুরু করেন ফুলচাষ। অনার্স পড়ুয়া ছেলে আখতারুজ্জামান সবুজ শহিদুলকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন। এখন তাদের ৭ বিঘা জমির ফুল থেকে মাসে আয় গড়ে ৭০ হাজার টাকা।

শহিদুলের জমির ফুল দিয়েই বগুড়ার বাজার চাহিদা অনেকটা পূরণ হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেছেন। সরজমিন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নের বেড়াগাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা মেলে তার জমিতে থোকায় থোকায় ফুটে থাকা নানা জাতের ফুল। বর্তমানে চন্দ্রমল্লিকা হলুদ এবং সাদা জাতের ফুল জমিতে শোভা পাচ্ছে রজনীগন্ধা এবং গোলাপের পাপড়িগুলো কেবল উঁকি দিচ্ছে। কয়েদিন পর সেগুলোও পূর্ণতা পাবে। জাতীয় দিবসগুলোকে কেন্দ্র করে দেশের সব জায়গায় ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়।

গেল বিজয় দিবসেও মোটা অঙ্কের টাকার ফুল বিক্রি করেছেন শহিদুল। জাতীয় দিবসগুলো ছাড়াও এখন প্রায় অনুষ্ঠানে ফুলের ব্যবহার বেড়েছে। সংগত কারণেই সারা বছর ফুলের চাহিদা থাকে। কথা হয় শহিদুলের সঙ্গে তিনি বলেন, আগে সবজি চাষ করতেন তিনি। কখনো লাভ হয়েছে আবার কখনো লোকশান গুনেছেন। ভগ্নিপতির ফুলচাষ দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করেন ফুলচাষ। কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি অর্থনৈতিকভাবে নিজেকে বদলাতে সক্ষম হন।

এখন তার আবাদের ফুল দিয়েই বগুড়ার চাহিদা পূরণ হচ্ছে। তিনি জানান, বগুড়া ছাড়াও পাশের জেলা জয়পুরহাট, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধাতেও নিয়মিত তার ফুল যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকার ফুল ব্যবসায়ীরাও মাঝে মধ্যে শহিদুলের ফুল নিতে আসেন।  শহিদুলের ছেলে আখতারুজ্জামন সবুজ বলেন, ফুল চাষে আমাদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। চাষে কোনো সমস্যায় পড়লে ঝিনাইদহে ফোন দিয়ে সমাধান নিতে হয়। স্থানীয় কৃষি বিভাগ কোনোদিন তাদের জমিতে আসেনি। কোনো সমস্যা নিয়ে কর্মকর্তাদের কাছে গেলে তারা ইউটিউব দেখে সমাধান বের করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ফলে আর কোনোদিন তাদের কাছে যাইনি। সবুজ বলেন, কৃষি বিভাগ যদি আমাদের পাশে থাকতো তাহলে আমাদের এই উদ্যোগকে আরও বহুদূর নেয়া যেতো। অনেকেই আমাদের আবাদ দেখে শেখার জন্য আসেন। আমরা যতটুকু শিখেছি ততটুকুই অন্যদের শেখানোর চেষ্টা করি। তবে কৃষি বিভাগ যদি অফিসিয়ালি সহযোগিতার জন্য কৃষকদের পাশে দাঁড়াতো তাহলে লাভজনক এই চাষ আরও বৃদ্ধি হতো।

দৈনিক বগুড়া