শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় কালো আখ থেকে উৎপাদন হচ্ছে লাল চিনি

বগুড়ায় কালো আখ থেকে উৎপাদন হচ্ছে লাল চিনি

বগুড়ায় চাষকৃত কালো আখ থেকে গুড় ও লাল চিনি উৎপাদন শুরু হয়েছে। জেলা সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের কৃষি উদ্যোক্তা আহসানুল কবির ডালিম এ সাফল্য দেখিয়েছেন। আট বিঘা জমিতে চাষের পর গুড় বাণিজ্যিকভাবে বিক্রিতে সাড়া ফেলেছেন। জেলার কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় কালো আখের আবাদ আরো বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়লে গুড় ও লাল চিনির বড় বাজার তৈরি হবে। চিনির আমদানিনির্ভরতা কমে আসবে।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন আহসানুল কবির ডালিম। প্রাতিষ্ঠানিক কিছু জটিলতার কারণে চাকরি ছেড়ে দেন। হয়ে ওঠেন কৃষি উদ্যোক্তা। ২০১৮ সালের দিকে তিনি নিজের ছয় শতক জমিতে প্রথমে ফিলিপাইন জাতের আখ (ব্ল্যাক সুগারকেন) চাষ শুরু করেন। সাতটি আখ থেকে তার জমি ভরে ওঠে। পরের বছর তিনি আখ থেকে হাজারো চারা তৈরি করেন। সে চারা স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিক্রি করেন। পরীক্ষামূলক চাষে সফলতার পর বাণিজ্যিকভাবে আখ চাষে সফল এ কৃষি উদ্যোক্তা এবার গুড় তৈরি করছেন। দেশে প্রথমবারের মতো বগুড়ায় এ আখ থেকে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গুড় তৈরি করেন তিনি। উৎপাদন করেন লাল চিনিও। এরই মধ্যে মোড়কজাত করে তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। সুস্বাদু হওয়ায় এ গুড়ের চাহিদাও ব্যাপক।

আহসানুল কবির ডালিম জানান, প্রথমে তিনি ফিলিপাইন থেকে ১৬টি চারা সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে টিকে যায় সাতটি। সেসব চারা থেকে আরো চারা তৈরি করে চাষ করেন। এক বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে চাষকৃত আখ থেকে গুড় হয় দুই টন। প্রতি বিঘায় দুই থেকে চার লাখ টাকার গুড় ও গুড়ের পাউডার বা হাতে তৈরি লাল চিনি পাওয়া যাবে, যা পরবর্তী বছর দ্বিগুণ হবে। একই সঙ্গে আখের চারাও বিক্রি করা যাবে। উৎপাদিত গুড় কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. এনামুল হক বলেন, ‘‌তার প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ দেখে অন্যান্য কৃষক কালো আখ চাষে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগ চাষীদের উৎসাহিত করছে, বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে। এটি কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা চলছে।’

দৈনিক বগুড়া