বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় ফিলিপাইনের কালো আখ চাষে সম্ভাবনা

বগুড়ায় ফিলিপাইনের কালো আখ চাষে সম্ভাবনা

বগুড়ার সদর উপজেলার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আহসানুল কবির ডালিম। উপজেলার লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নে আট বিঘা জমিতে আখচাষে ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন তিনি। বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছেন তিনি। 

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন ডালিম। প্রাতিষ্ঠানিক কিছু জটিলতার কারণে চাকরি ছেড়ে দেন। কৃষির প্রতি ঝুঁকে পড়েন ডালিম। ছয় শতক জমিতে চাষ করেছেন ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ (ব্ল্যাক সুগার কেইন)। সেই আখ সুমিষ্ট ও ব্যবসায়িকভাবে লাভজনক হওয়ায় আশপাশের চাষিরাও এ জাতের আখ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আট বিঘা জমিতে চাষের পর গুড় বাণিজ্যিকভাবে বিক্রিতে সাড়া ফেলেছেন তিনি।

bogura

আখগুলোর বাইরের অংশ দেখতে কালো খয়েরি। লম্বায় সাধারণত ১২ থেকে ১৬ ফুট। দেশীয় আখের মতো হলেও এর আছে বেশ কিছু ভিন্নতা। এই আখের কাণ্ড কিছুটা নরম, রস বেশি, মিষ্টি বেশি, চাষের পর লাভ বেশি। এসব কথা ভেবেই অনেক চেষ্টার পর ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ ‘ব্ল্যাক সুগার কেইন’ চাষ করেছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আহসানুল কবির ডালিম।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় কালো আখের আবাদ আরও বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়লে গুড় ও লাল চিনির বড় বাজার তৈরি হবে। চিনির আমদানিনির্ভরতা কমে আসবে বলে কর্মকর্তারা মনে করেন।  

bogura

ডালিম জানালেন, ৭টি আখ থেকে তার জমি ভরে ওঠে। পরের বছর তিনি আখ থেকে হাজারও চারা তৈরি করেন। সে চারা স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিক্রি করেন। পরীক্ষামূলক চাষে সফলতার পর বাণিজ্যিকভাবে আখ চাষে সফল এ কৃষি উদ্যোক্তা এবার গুড় তৈরি করছেন। দেশে প্রথমবারের মতো বগুড়ায় এ আখ থেকে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গুড় তৈরি করেন তিনি। উৎপাদন করেন লাল চিনিও। এরই মধ্যে মোড়কজাত করে তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। সুস্বাদু হওয়ায় এ গুড়ের চাহিদাও ব্যাপক।

bogura

আহসানুল কবির ডালিম জানান, প্রথমে তিনি ফিলিপাইন থেকে ১৬টি চারা সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে টিকে যায় সাতটি। সেসব চারা থেকে আরো চারা তৈরি করে চাষ করেন। এক বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে চাষ কিরা আখ থেকে গুড় হয় দুই টন। প্রতি বিঘায় দুই থেকে চার লাখ টাকার গুড় ও গুড়ের পাউডার বা হাতে তৈরি লাল চিনি পাওয়া যাবে, যা পরবর্তী বছর দ্বিগুণ হবে। একই সঙ্গে আখের চারাও বিক্রি করা যাবে। উৎপাদিত গুড় কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

bogura

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. এনামুল হক বলেন, ডালিমের প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ দেখে অন্যান্য কৃষক কালো আখ চাষে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগ চাষিদের উৎসাহিত করছে, বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে। এটি কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।

দৈনিক বগুড়া