বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাতিরঝিলের আদলে সেতু হচ্ছে বগুড়ায়

হাতিরঝিলের আদলে সেতু হচ্ছে বগুড়ায়

বগুড়া শহরে করতোয়া নদীর ওপরে রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে ফতেহ আলী সেতুর পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ২০ কোটি টাকা। পুনর্নির্মাণে কাজ করবে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ।

গত ২২ মে বগুড়া-৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু এ কাজের উদ্বোধন করেন। নতুনভাবে নির্মিত হওয়া ফতেহ আলী সেতুতে থাকবে দৃষ্টিনন্দন এবং আধুনিক স্থাপত্যের ছোঁয়া।

৬০ বছর আগে ১৯৬২ সালে করতোয়া নদীর ওপর ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২১৩ ফুট দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় সেতুর কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেতুটি পুনর্নির্মাণ হলে জেলা সদরের সঙ্গে গাবতলী, সারিয়াকান্দি ও সেনাতলা এ চার উপজেলার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে। দীর্ঘদিন সংস্কার অভাবে প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে সেতুটিতে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। নতুন সেতু হওয়ার পর বগুড়া শহরে প্রবেশে দূরত্ব কমবে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার।

করতোয়ার ওপর ফতেহ আলী সেতু দিয়ে প্রতিদিন বগুড়ার তিন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। ২০১৮ সালে সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। ২০২১ সালে এটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়। ২০২২ সালের ৩১ জুলাই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সেতুর নকশা ও অর্থ বরাদ্দ দেয়। বর্তমান সেতুটির দৈর্ঘ্য ২১৩ ফুট, প্রস্থ ২০ ফুট। তবে নতুন দৃষ্টিনন্দন সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ২২৬ ফুট ও প্রস্থ হবে ৪০ ফুট।

মানুষের চলাচলে জন্য দুইপাশে ৮ ফুট করে ফুটপাত ও মাঝের ২৪ ফুট দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। প্রাথমিকভাবে সেতু নির্মাণে ২২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। এরপর ব্যয় কমে ১৯ কোটি ৮৩ লাখে নেমেছে। এক বছরের মধ্যে সেতুটির পুনর্নির্মাণে কাজ শেষ হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ব বগুড়ার লাখো মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে কার্যকরী হবে নতুন সেতুটি। গাবতলী, সারিয়াকান্দি ও সেনাতলা উপজেলার কৃষকরা ভোগান্তি ছাড়াই কৃষিপণ্য সরবরাহ করতে পারবেন শহরের বাজারগুলোতে। এতে শহরমুখী সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন কৃষকরা। এছাড়া সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার যমুনা নদীর জেলেরা খুব সহজে ভারী যানবাহনে মাছ সরবরাহ করতে পারবেন।

যানযাট কমবে শহরে

বগুড়া শহরের ফতেহ আলী মাজার গেট থেকে চেলোপাড়া সিএনজি স্ট্যান্ড পর্যন্ত দিনব্যাপী যানজট লেগেই থাকে। এর কারণ ফতেহ আলী সেতুটি সরু। সেতুটি পুনর্নির্মাণ হলে সব রকমের যানবাহনের জটলা কমবে। পাশাপাশি যানবাহন চলাচলের জায়গা বৃদ্ধি পাবে।

বগুড়া সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ফতেহ আলী সেতু পুনর্নির্মাণে প্রায় একবছর সময় লাগবে। এসময়ে সাধারণ মানুষদের চলাচলে এরই মধ্যে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

বগুড়া-৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, প্রধানমন্ত্রী বগুড়ার মানুষের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে ফতেহ আলী সেতুটি দৃষ্টিনন্দন করছেন। উন্নয়নের মহাসড়কে বগুড়াও পিছিয়ে নেই। এরই মধ্যে তিনি বগুড়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেললাইন নির্মাণ, ইপিজেড, দ্বিতীয় বিসিক শিল্পনগরী, শহীদ মিনার ও বগুড়া প্রেস ক্লাব ভবন নির্মাণে জন্য অনুদান দিয়েছেন। এছাড়া বগুড়া পৌরসভার জন্য ১৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তার কথাও তিনি বলেছেন।

বগুড়া সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, ফতেহ আলী সেতু বগুড়ার মানুষের উন্নয়নের অন্যতম অংশ। সেতুটি হবে দৃষ্টিনন্দন। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের পাশাপাশি বিনোদনেরও জোগান দেবে এ সেতু। দ্রততম সময়ে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে।

দৈনিক বগুড়া