শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়া শহরে আখের আলীর বিয়ের রিকশা

বগুড়া শহরে আখের আলীর বিয়ের রিকশা

বগুড়া শহরে যারা ঘুরে বেড়ান বা প্রয়োজনে বের হন তারা অনেকেই খেয়াল করবেন গত কয়েক মাস হলো শহরে রঙবেরঙের ফুল দিয়ে সাজানো এক ব্যতিক্রমী রিকশা। কৃত্রিম বিভিন্ন ধরণের ফুলে দিয়ে রিকশাটিকে এমন ভাবে সাজানো হয়েছে দেখলে মনে হবে যেন সৌখিন কোন ফুলপ্রেমী বা সৌন্দর্য্য পিপাসু মানুষ রিকশাটিকে সাজিয়েছেন তার মনের মাধুরী দিয়ে।

রিকশাটিতে নানা রঙের ফুলের সাথে আছে লাল রঙের জর্জেট কাপড়, যাতে নতুন কোন বর-কনে রিকশায় উঠলে তাদের বাংলার চিরায়ত সাজের ঐতিহ্যের স্বাদ দেওয়া যায়। আর রিকশাতে উঠলে আপনারও মনে হবে যেন ফুলের রাজ্যে ভেসে কোন এক আনন্দ ভ্রমণে যাচ্ছেন। আবার আপনার এই খুশির মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে রসিক রিকশাওয়ালার গান-বাজনার আয়োজন। বলছিলাম বগুড়া শহরের খান্দার এলাকার সৌখিন রিকশাওয়ালা মো. আখের আলীর কথা।

তার রিকশা এই ব্যতিক্রমী সাজসজ্জা সম্পর্কে জানতে চাইলে দুই সন্তানের জনক আখের আলী বলেন, একদিন ভাড়া নিয়ে তিনি উপশহর এলাকায় যান, সেখানে নতুন বর-কনেবাহী ভাড়ার গাড়িটি নষ্ট হয়ে যায়। তখন বরযাত্রীরা ওই গাড়ির ফুল দিয়ে তার রিকশা সাজিয়ে দেন এবং বর-কনেকে তার রিকশায় তুলে দেন। সেই থেকে তিনি তার রিকশার ফুল আর খোলেননি।

তিনি আরও বলেন, এতে তার লাভই হয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে প্রায় তিন মাস হলো তিনি রিকশা ফুল না ফেলে দিয়ে আরও বাড়িয়েছেন সাজিয়েছেন আরও নতুন ভাবে। এমনকি ক’দিন পর পর তিনি রিকশার ফুল পাল্টে দেন, আবার অনেক নিয়মিত যাত্রী তাকে ফুল কিনে দিয়ে রিকশা নতুন করে সাজাতে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, এখন শহরে তার রিকশার আলাদা একটা কদর আছে। অনেকে শখ করে তার রিকশা উঠতে ফোন করে ডেকে নেন।

আবার অনেক বিয়েতেও তার ডাক পড়ে। তবে অনেক ক্ষেত্রে তাকে অগ্রীম বুকিং দিয়ে রাখতে হয়, কারণ ইদানিং তার ভাড়া অনেক বেড়েছে। এছাড়াও প্রায় প্রতি সপ্তাহে তিনি কোন না কোন বিয়ের বুকিং পান। এমন কি ঘোরাঘুরির জন্য অনেক জুটিও তার রিকশা প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নেন। এতে তার আয় আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

তবে দিনের বেলায় অন্য কাজ করার জন্য বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে আখের আলীর রিকশা। চাইলে আপনিও একদিন বুকিং দিয়ে হতে পারেন এই রিকশার যাত্রী, নানা রঙের ফুলের ভেলায় চড়ে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন কোন পছন্দের জায়গা থেকে।

দৈনিক বগুড়া