
সংগৃহীত
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরে তারাপুর গ্রাম সংলগ্ন আমঝুকি নামক স্থানে’ সান্তাহার সাইলো’ অবস্থিত। বর্তমান সরকার দেশের গম ও চাল উন্নত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও সারাদেশে রেল ও সড়ক পথে বিতরণের উদ্ধশ্যে এই দুটি সাইলো সান্তাহারে প্রতিষ্টিত করার সিদ্ধান্ত নেন। এই ক্ষেত্রে সান্তাহার রেলওয়েতে ব্রডগেজ ও মিটারগ্রেজ পদ্ধতি থাকায় এই বৃহৎ প্রকল্প সান্তাহারে স্থাপনে বিশেষ ভ‚মিকা রেখেছে বলে জানা গেছে।
বর্তমান দেশে আওয়ামী লীগ সরকার যে কয়েকটি বৃহৎ স্থাপনা স্থাপন করেছেন, সান্তাহার সাইলো তার একটি। দক্ষিন এশিয়ায় এটি প্রথম সৌর বিদ্যুৎ চালিত ওয়ারহাউস বা সাইলো। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অত্যাধুনিক সাইলো উদ্ধোধন করেন ২০১৭ সালের ২৬ ফ্রেবুয়ারী।
সান্তাহার সাইলো কার্য্যলয় সূত্রে ও সরজমিনে ( আজ সোমবার) জানা যায়, ১৯৬৫ সালে স্থাপিত হয় প্রথমে সাইলো খাদ্যশষ্য সংরক্ষণাগার (গম) ( কেপিআই)। এখানে ১৬ একর ( দৈঘ্য ২৫০ মিটার,প্রস্থ ৯০ মিটার) জমিতে সুউচ্চ,নান্দনিক, আধুনিক দুটি খাদ্যশস্য ( সাইলো)
(গম) এবং খাদ্যশষ্য (চাল) স্থাপিত হয়েছে। উন্নত পদ্ধতিতে চল ও গম কে সংরক্ষন করতে এ দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সড়ক ও রেলপথের অবকাঠামোও খাদ্য ও শষ্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁ ও বগুড়ার মধ্যভাগে রেলওয়ে জংসন নামে খ্যাত সান্তাহার শহরকে বেছে নেওয়া হয়। ২৫ তলা সুউচ্চ বিশাল খাদ্যশষ্য ভবন সাইলো (গম) ভবনটি নির্মাণ করেন জামার্নি কোম্পানি ক্যানেস্কা কোম্পানি। এটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছিল ৪০ লাখ ৪০ হাজার ৬৫ মর্কিন ডলার। নির্মান সময় ৫ বছর। এখানে গম সংরক্ষণ করা হয় বিন পদ্ধতিতে। মাটির নিচেও ২০ ফুট সংরক্ষনাগার আছে। দেশের মোট ৫ টি সাইলোর দুটি সান্তাহারে অবস্থিত। সাইলোর নিজস্ব জমিতে ২০০৯ সালে দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎসুবিধাসহ সাইলো(চাল) প্রতিষ্টিত হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন পর্যায়ে প্রকল্প সাহায্যের সাশ্রয়ী অর্থ ব্যবহার করে দ্বীতল গুদামের ছাদে গ্রিডলাইট সোলার সিস্টেম স্থাপন করা হয়। এই সোলার সিস্টেম থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। সোলার সিস্টেমের উৎপাদিত ক্ষমতা ৩৬০.০০ কিলোওয়াট। সোলার প্যানেল সংখ্যা ১৪৪০টি। এখানে মোট ১৮টি ইনভার্টার (রহাবঃবৎ) আছে। প্রতিটি ইনভার্টারগুলো ডিসি কারেন্টকে এসি কারেন্টকে রুপান্তর করে। এখানে বৃহৎ সোলার সিস্টেম স্থাপন ব্যয় ১৬,৯৫৯৬,০০ কোটি টাকা। এখানের ওয়ারহাউস নির্মাণ ব্যয় ১৩৩,৫৮৩৫,০০ কোটি টাকা। জানা গেছে, ২৫০০০ হাজার মেট্রিক টন চাল ধারন ক্ষমতা এই বৃহৎ প্রকল্পের উচ্চতা ৮.৫ মিটার । এখানকার প্রতিটি কক্ষে ৬টি ইন্ড্যাষ্টিয়াল টাইপ এয়ারকুলার ও প্রতিটি কক্ষে ৮টি অগ্নি চিহ্নিতকরণ সিগনাল আছে। ৪টি রিচার্জবেল ব্যাটারি দ্বারা পরিচালিত ফর্ক লিফট আছে। আছে ৯৬টি ইন্ড্রাষ্টিয়াল এয়ারকুলার। এখানে মোট ১৬ টি গুদাম ঘর আছে। প্রতিটি কক্ষের বর্হিদেয়াল,দরজা ও ছাদ তাপনিরোধক। বস্তাবন্দি চাল সংরক্ষণের জন্য ২৬.০৪০ টি প্লাস্টিক প্যালেট আছে। এটি ব্যবহারের কারনে চালের প্রতিটি বস্তার সংস্পর্শে বায়ু চলাচল করে। আর বায়ু চলাচলের কারনে সংরক্ষিত চালের গুনগত মান অক্ষুন্ন থাকে। সর্বমোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩২,৭১০০.০০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের অর্থের উৎস, জপাান সরকারের ( জাইকা) অনুদান। ২/ জিওবি। জিওবি ব্যয় ৮২.১৬৬৯.০০ কোটি টাকা। সাইলো ভবন থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার একটি পাকা সড়ক সান্তাহার-বগুড়া মুল সড়কে সংযুক্ত হয়েছে। এই সড়ক ও রেল পথে সাইলোর চাল,গম সারাদেশে নিয়ে আসা ও পৌছানো হয়। আদমদীঘি উপজেলার যে ৭টি বুহৎ স্থাপনা (
কেপিআই) আছে ,তার দুটিই এখানে অবস্থিত। বৃহৎ এই সাইলোতে মোট ১২৩ টি জনবলের মধ্যে বর্তমানে ৭৪ জন কর্মকর্তা,কর্মচারী নিয়োজিত আছে। তাছাড়া প্রতিদিন প্রায় শতাধিক শ্রমিক এই প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কাজ করছে। সান্তাহার সাইলো অধিক্ষক ( ভারপ্রাপ্ত) শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দীন চৌধুরী জানান, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও সংরক্ষরণে ক্ষেত্রে সান্তাহার সাইলো বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। আর দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এই সাইলো ( চাল) উদ্ধোধন করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি নানা ক্ষেত্রে দেশের ও
এই এলাকার সুনাম বয়ে এনেছে।