বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’- বিবেক ও সভ্যতার লজ্জা

‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’- বিবেক ও সভ্যতার লজ্জা

৭৫ এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, বাঙালির মুক্তির প্রবাদপুরুষ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর শোকে বিহ্বল যখন পুরো জাতি, তখন নগ্ন উল্লাসে মেতে উঠেছিল ৭১ এর পরাজিত শক্তি। তবে ইতিহাসের বর্বরোচিত এই হত্যাকাণ্ডের জন্য বাঙালি জাতি হিসেবে বাংলার মানুষ শোকাহত হয়, লজ্জিত হয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মতোই আরেকটি লজ্জার ইতিহাস সামনে এসেছিল ১৯৭৯ সালের জুলাই মাসে। এ মাসেই অনুষ্ঠিত হওয়া সংসদের প্রথম অধিবেশনে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার জাতীয় সংসদকে ব্যবহার করে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত অবৈধ সামরিক সরকারের সমস্ত বর্বর, অন্যায্য কাজের বৈধতা আদায় করে নেয় ইনডেমনিটি আইন পাশ করানোর মাধ্যমে।

জাতীয় সংসদকে ব্যবহার করে বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয় ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ডের এবং জিয়াউর রহমানের সামরিক আদালতে বিনা বিচারে সহস্রাধিক সৈনিক হত্যার।

৯ জুলাই অর্থাৎ ১৯৭৯ সালের যে দিনটিতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে পাস হয় সেই দিনটি শুধু আমাদের দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক নয় বরং সারা বিশ্বের জন্যই ৯ জুলাই পাস হওয়া পঞ্চম সংশোধনী কলঙ্কজনক। কারণ এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সর্বোচ্চ অপব্যবহারের মাধ্যমে পঞ্চম সংশোধনীর দ্বারা বিচার প্রার্থীর বিচার চাওয়ার পথ রুদ্ধ করাকে আইনি বৈধতা দিয়েছিল জাতির সর্বোচ্চ ফোরাম জাতীয় সংসদ। এরকম একটা ঘটনা নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্কের।

দৈনিক বগুড়া