বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হজের ফজিলত ও সওয়াব

হজের ফজিলত ও সওয়াব

ইসলামের পাঁচটি মূল ভিত্তির মধ্যে চতুর্থ ও অন্যতম হচ্ছে হজ। মহান রাব্বুল আলামিন  সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলিমের উপর দ্রুত হজ সম্পাদন করা ফরয করেছেন। হজ মুসলিম উম্মাহর গর্ব। নানা জাতি ও বর্ণের মুসলিমদের ঐক্য ও সাম্যের প্রতীক। হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। হজে আর্থিক ও কায়িক শ্রমের সমন্বয় রয়েছে। অন্য কোনো  ইবাদতে হজের মতো এই দুইটি একসঙ্গে পাওয়া না যায় না।

প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ পবিত্র হজ পালনে সৌদি গমন করেন। কিন্তু গত বছর থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়ে পড়া মহামারি কোভিড-১৯ বা করোনার কারণে বিপুল সংখ্যক হজযাত্রী গমনের সুযোগ পাচ্ছেন না। কিন্তু অগণিত কিংবা নির্ধারিত— যত সংখ্যক হাজি-ই সেখানে যান, তারা আল্লাহপ্রেমের পাঠ চুকিয়ে রাসূলপ্রেমের ষোলকলা পূর্ণ করেন। মহা সৌভাগ্য ও পুণ্যের মিছিলে নিজেদের নাম লেখান।

হজ কী?
স্বাভাবিকভাবে ‘হজ’ অর্থ মহৎ কাজের ইচ্ছে করা। পারিভাষিকভাবে হজ বলে, হজের নিয়তসহ ইহরাম ধারণ করে— নির্দিষ্ট দিনে আরাফার ময়দানে অবস্থান করা ও কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। (ফাতাওয়া শামি, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৪৫৪)

আর ‘ওমরাহ’ অর্থ পরিদর্শন করা। ওমরাহর নিয়তে ইহরাম ধারণ করা, এরপর তাওয়াফ ও সাঈ করে মাথা মুণ্ডন করে ইহরামমুক্ত হওয়াকে ওমরাহ বলে। (ফাতহুল বারি, খণ্ড: ০৩, পৃষ্ঠা: ৫৯৭)

হজের সওয়াব ও ফজিলত
আল্লাহর রাসূল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মকবুল হজের পুরস্কার জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই নয়।’ (বুখারি, খণ্ড: ০১, পৃষ্ঠা: ২০৬)

হজ না আদায়ের শাস্তি
রাসূল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘হজ ফরজ হওয়ার পর তা আদায় না করে মৃত্যুবরণ করা- ইহুদি বা খ্রিস্টান হয়ে মৃত্যুবরণ করার সমতুল্য। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৬৭)

হজের সময় ও নির্ধারিত স্থান
হজের নির্দিষ্ট সময়- শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজের প্রথম ১০ দিন। বিশেষত ৮ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত পাঁচ দিন। এ পাঁচ দিনই মূলত হজ পালন করা হয়। হজের নির্ধারিত স্থান-কাবা শরিফ, সাফা-মারওয়া, মিনা, আরাফা ও মুজদালিফা। (আসান ফিকাহ, খণ্ড: ০২, পৃষ্ঠা : ২৫১)

হজের প্রকারভেদ 

১. ইফরাদ
শুধু হজের নিয়তে ইহরাম ধারণ করে ওই ইহরামেই হজের সব আমল সম্পন্ন করা।

২. তামাত্তু
শুধু ওমরাহর নিয়তে ইহরাম ধারণ করে ওমরাহর কাজ সমাপ্ত করা। এরপর মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম থেকে মুক্ত হওয়া। অতঃপর ওই সফরেই হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে হজের সব আমল সম্পাদন করা।

৩. কিরান
একসঙ্গে ওমরাহ ও হজের নিয়তে ইহরাম ধারণ করে ওই (একই) ইহরামেই ওমরাহ ও হজ পালন করা। এ তিন প্রকারের মধ্যে উত্তম হলো ‘কিরান। ’ কিন্তু ইহরাম দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে নিষেধাজ্ঞাবলি সঠিকভাবে মেনে চলতে না পারার আশঙ্কা থাকলে হজে তামাত্তুই উত্তম। (ফাতাওয়া শামি, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৫২৯) 

দৈনিক বগুড়া