কবি বন্দে আলী মিয়ার ১১৪তম জন্মদিন আজ। ১৯০৬ সালের ১৭ জানুয়ারি পাবনার রাধানগরে উমেদ আলী মিয়া-নেকজান নেসার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
শিশুতোষ ছড়া ও গান রচনায় বন্দে আলী মিয়া বিশেষ অবদান রেখেছেন। এছাড়া তিনি ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, গীতিকার, উপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী।
কবির প্রথম কাব্য ‘ময়নামতির চর’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বেশ প্রশংসা পায়।
২৬ বছর বয়সেই সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতি পান বন্দে আলী মিয়া। তার শিশুতোষ গ্রন্থ ১০৫টি ও অন্যান্য বিষয়ে লেখা গ্রন্থ ৩১টি।
বন্দে আলী মিয়ার রচিত গ্রন্থের মধ্যে ‘কুচ-বরণ কন্যা’, ‘গুপ্তধন’, ‘শিয়াল পন্ডিতের পাঠশালা’, ‘চোর-জামাই’, ‘ঝিনুক-পরী’, ‘দুই বন্ধু’, ‘যেমন কর্ম-তেমন ফল’, ‘ডাইনি বউ’, ‘শিশুদের বিষাদসিন্ধু’ উল্লেখযোগ্য।
১৯২৩ সালে বন্দে আলী মিয়া রাধানগর মজুমদার একাডেমি (বর্তমানে আরএম একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ) থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা ও ১৯২৭ সালে কলকাতার ইন্ডিয়ান আর্ট একাডেমি থেকে চারুকলায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৩০ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত কলকাতা করপোরেশন স্কুলে সহকারী শিক্ষক চাকরি করেন তিনি। জীবনের শেষদিকে বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে কাজ করেছেন। সে সময় ছোটদের আসর ‘সবুজ মেলা’ পরিচালনা করতেন বন্দে আলী মিয়া।
‘বিকাশ’ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন বন্দে আলী মিয়া। পরে তিনি পত্রিকার যুগ্ম-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯২৭ সালে তার লেখা ছড়া ও কবিতা ভারতের ‘বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি গেজেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে কলকাতা ও ঢাকার বিভিন্ন পত্রিকা ও সাহিত্য সাময়িকীতে তার লেখা প্রকাশ হতো।
১৯৬১ সালে ইস্ট-বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে বন্দে আলী মিয়ার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় শিশুতোষ পত্রিকা ‘ময়ূরপঙ্খি। জীবনের শেষদিকে রাজশাহীর ‘প্রতীতি’ সম্পাদনা করেন তিনি।
তিরিশ-চল্লিশ দশকে কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, অবনীন্দ্রনাথ, প্রমথ চৌধুরী, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, একে ফজলুল হক, ওস্তাদ জমির উদ্দিন খাঁ’র মতো বরেণ্য সাহিত্যিকদের সাক্ষাৎ পান বরেণ্য এ কবি।
১৯৭৯ সালের ২৭ জুন ৭৩ বছর বয়সে রাজশাহীর কাজিরহাটে নিজ বাসভবনে মারা যান কবি বন্দে আলী মিয়া।
দৈনিক বগুড়া