বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁদলেন নানক, মুগ্ধ সাদেকের স্যালুট...

কাঁদলেন নানক, মুগ্ধ সাদেকের স্যালুট...

দ্বন্দ্ব-সংঘাত ভুলে নৌকার পক্ষে কাজ করতে ঐক্যবদ্ধ হলেন ঢাকা-১৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং ওই আসনে নৌকা থেকে এবার মনোনীত পাওয়া সাদেক খান।

ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য নানকের আবেগঘন বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাদেক খান বলেন, ‘আমার বড় ভাই যে বক্তব্য সবার সামনে দিয়েছেন, আমাকে বুকে তুলে নিয়েছেন এ জন্য আমি উনাকে স্যালুট জানাই।’

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাদেক খানকে সমর্থন জানান নানক।

নানকের পক্ষ থেকে আয়োজিত মতবিনিময় সভার শুরুতে দশ বছরে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরের উন্নয়নের প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। সভা শুরুর আগে থেকেই সূচনা কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় নানকের নামে বিভিন্ন স্লোগান নিয়ে আসে ১৫ আসনের নেতাকর্মীরা। নানকের পক্ষে নেতাকর্মীরা বলেন, ‘দুর্দিনের নানক ভাই আমরা তোমায় ভুলি নাই, নানক ভাই হারে নাই হেরে গেছে সততা।’

আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসনে কে হবেন নৌকার মাঝি তা নিয়ে বেশ ক’দিন ধরেই নানক ও সাদেক খানের মধ্যে শীতল লড়াই চলছিল। সে শীতল লড়াই পরে সংঘাতে রূপ নেয়। চলতি মাসে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিতরণের শুরুর দিন যা প্রকাশ্য আসে। ওই দিন মনোনয়নপত্র তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘাতে লিপ্ত হয় নানক ও সাদেক খানের কর্মীরা। দুই পক্ষের সংঘাতে দু’জন নিহত হন।

মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর তাদের দু’জনের এমন এক হয়ে যাওয়ায় ঢাকা-১৩ আসনের নির্বাচনী রাজনীতি নতুন মাত্রা পেল।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। তখন সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনেকেই সেখানে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে নানক বলেন, ‘আমি যেদিন থেকে এ এলাকার সংসদ সদস্য হয়েছি, সেদিন থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে গিয়েছি। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এবার নৌকা তুলে দিয়েছেন সাদেক খানের হাতে। তাই সব ভেদাভেদ ভুলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ দেশকে রক্ষার স্বার্থে, নৌকার স্বার্থে আমাদের এক হতে হবে। কারণ নৌকার বিজয় ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।’

‘সাদেক খান এ এলাকার মাটি ও মানুষের নেতা, আমার ভাই। তিনি দীর্ঘদিন এ এলাকায় আমাদের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এবার নৌকা প্রতীক সাদেক খানের হাতে তুলে দিয়েছেন। এ জন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই,’ বলেন নানক।

সাদেক খানের উদ্দেশে নানক বলেন, ‘ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির, নেতার সঙ্গে নেতার প্রতিযোগিতা হতেই পারে। কিন্তু সবাইকে আপনার বুকে তুলে নিতে হবে।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার বড় ভাই জাহাঙ্গীর কবির নানক। কেউ বলতে পারবে না আমি তার সঙ্গে কোনোদিন বেয়াদবি করেছি। আমার বড় ভাই যে বক্তব্য আজকে রেখেছেন, আমি উনাকে (নানক) সবার সম্মুখে স্যালুট জানাই।’

নৌকা থেকে মনোনীত সাদেক খান বলেন, ‘আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ভেদাভেদ ভুলে নৌকার স্বার্থে কাজ করতে হবে। যদি কোনো ভুল করে থাকি তবে আমিও ক্ষমা চাই, সংশোধন করে নেব।’

দৈনিক বগুড়া