বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কাজের বিনিময়ে কখনো প্রেম করতে চাইনি: শ্রীলেখা

কাজের বিনিময়ে কখনো প্রেম করতে চাইনি: শ্রীলেখা

অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল মৃত্যুর পর অবসাদ আর হতাশা নিয়ে মুখ খুলেছেন বলিউড-টলিউডের অনেকেই। সরব হয়েছেন স্বজনপোষন নীতি নিয়েও। তাতে উঠে এসেছে বেশ কিছু তাবড় ব্যক্তিত্বের নাম। মামলাও হয়েছে। এই সুযোগে অনেকেই সাহস পেয়ে মুখ খুলছেন। তবে ভেতরের চিত্রটা সব ইন্ডাস্ট্রিতেই এক। সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সেই কথাই তুলে ধরলেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।

তার পড়াশুনা, টলিউডে প্রবেশ- এই সব কিছুই নায়িকা তুলে ধরেন তার দীর্ঘ বক্তব্যে। জানান, সুশান্তের মতই তার কোনো গডফাদার ছিল না ইন্ডাস্ট্রিতে। ফলে কাজ পেতে এবং কাজ টিকিয়ে রাখতে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। শ্রীলেখার কথায়, ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে সবসময়ই পাওয়ার গেম চলে। সেই সঙ্গে রয়েছে ক্ষমতার আস্ফালন। অবশ্য সেই ক্ষমতা কে কীভাবে ব্যবহার করবে তা নিতান্তই ব্যক্তিগত।

শ্রীলেখা বলেন, ‘১৯৯৭-৯৮ সালে যখন আমি অভিনয় জগতে আসি তখন জুটি হিসেবে হিট ছিল প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা। কোনো দিনই মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলাম না। সবদিনই নায়িকার বোন, দিদি হয়েই থাকতে হল। এমনকী কারও সঙ্গে জুটিও তৈরি করতে পারলাম না।’

‘আসলে আমি ক্যামেরার সামনে ভালো অভিনয় করি, কিন্তু ক্যামেরা বন্ধ হয়ে গেলে আর করতে পারি না। ফলে প্রথম দিন থেকেই আমি এখানে ঠিক খাপ খাওয়াতে পারলাম না। কিন্তু মুখে বলা হত আমি অভিনয়টা ভালো পারি। হিরোইন হওয়ার যোগ্য। কিন্তু সব ঠিক হয়ে যাওয়ার পরও কীভাবে যেন বাদ পড়ে যেতাম। আজ আমার বাড়ির নীচে দামি গাড়ি সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে না। কিন্তু আমার রাতের ঘুমটা তাদের থেকে অনেক ভালো হয়।’

শ্রীলেখার দাবি, ‘নিজের শর্তে খুব ভালো আছি। যদিও আমি ডিপ্রেশনের রোগী। আমার অভিমান খুব ব্যক্তিগত। আমি কাজের বিনিময়ে কখনো প্রেম করতে চাইনি। কোনো ছলানিপনা নেই। আমি সৎ, আমি যখন থাকব না তখন যাতে আমার সততাটুকু থেকে যায় সেই চেষ্টাই করেছি। আমি কাঁধ চাই না। আমার কাঁধ খুব শক্ত। আমার কাঁধেই অনেকে মাথা রাখতে পারে।’

মিডিয়া নামক সার্কাসে রুচি নেই শ্রীলেখার। তিনি বিশ্বাস করেন, সব কিছু টিআরপির নিরিখে হয় না। শ্রীলেখা অনুরোধ করেছেন, তার মৃত্যুর পর সাদা পোশাকে কেউ যেন শোক দেখাতে না আসে। কারণ মৃত্যু তিনি তার কাছের মানুষদের সঙ্গেই সেলিব্রেট করতে চান। ভেবেছিলেন এই সোশ্যাল মিডিয়া, এই তঞ্চকতার জগত থেকে অনেক দূরে থাকবেন।

কিন্তু সুশান্তের মৃত্যু তাকে গভীর ভাবে নাড়া দিয়েছে। তাই এত বছর বাদে মনের কথা তিনি খুলে বললেন। ব্যক্তি বিশেষে ইন্ডাস্ট্রির তাবড় ব্যক্তিত্বদের নাম তিনি নিয়েছেন। কিন্তু কেউ ব্যক্তিগত আঘাত পেলে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী নন এমনটাও জানিয়ে দিয়েছেন। ফ্ল্যাটবাড়ি ছেড়ে শহরের উপকন্ঠে কোথাও একটা বাড়ি বানিয়ে থাকতে চান পোষ্যদের সঙ্গে। এমনটাই তার আশা।

কথা বলতে গিয়ে শ্রীলেখার চোখের কোণে পানি, গলা বুজে গেল। তবুও নিজেকে ঝাঁকিয়ে বললেন, আমি স্ট্রং, আমাকে ভালো থাকতেই হবে। লড়াইয়ের ময়দানে হেরে যেতে চাই না। আবারও একটা সুশান্ত সিং এর মৃত্যুকে উদাহরণ হিসেবে টেনে যেন এই সত্যগুলো বলতে না হয় সেদিকে নজর দেয়া হোক। তিনি বলেন, স্বজনপোষন ইন্ডাস্ট্রিতে ছিল, আছে, থাকবে।

দৈনিক বগুড়া