বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন অর্থবছরের ২০২০-২১ বাজেটে দাম কমেছে চিনির

নতুন অর্থবছরের ২০২০-২১ বাজেটে দাম কমেছে চিনির

নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেটের পর রাজধানীর বাজারে চিনির দাম কিছুটা কমেছে। চিনি আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়করে ছাড় দেয়ায় এ দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রোববার (১৪ জুন) বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে মহামারি করোনার কারণে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গত ১১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটে চিনি আমদানির অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন তিনি।

অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের তিন দিনের মাথায় রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কেজিতে চিনির দাম পাঁচ টাকা কমেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি চিনি বিক্রি করছেন ৫৫-৬০ টাকা। যা বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের আগে ছিল ৬০-৬৫ টাকা।

এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে চিনির কর বাড়ানো হয়। ওই বাজেটের আগে অপরিশোধিত চিনির ওপর প্রতি টনে স্পেসিফিক ডিউটি (নির্ধারিত কর) ছিল দুই হাজার টাকা।

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে তা বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করা হয়। অর্থাৎ প্রতি টনে কর বাড়ানো হয় এক হাজার টাকা। আর পরিশোধিত চিনিতে স্পেসিফিক ডিউটি সাড়ে চার হাজার বাড়িয়ে ছয় হাজার টাকা করা হয়।

এর ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে কয়েক দফায় চিনির দাম কেজিতে ১৫ টাকা বাড়ে। বাজেটের আগে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিনির কেজি দেখতে দেখতে ৬৫ টাকায় পৌঁছে যায়।

এ পরিস্থিতিতে রোজায় চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমানোর ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। ফলে রোজায় কিছু কিছু বাজারে চিনির কেজি ৬০ টাকায় নেমে আসে। এখন প্রস্তাবিত বাজেটে অগ্রিম কর কমানোর ঘোষণায় দাম আরও একটু কমলো।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী ইকরামুল বলেন, রোজার আগে প্রতিকেজি চিনি ৬৫ টাকা বিক্রি করেছি। দুইদিন ধরে সেই চিনি ৫৫ টাকায় বিক্রি করছি। বাজেটে কর কমানোর কারণে চিনি কেনা দামে বিক্রি করে দিচ্ছি। কারণ চিনি বেশিদিন ধরে রাখলে সামনে লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হতে পারে।

রামপুরার ব্যবসায়ী বাবু বলেন, গত বছর বাজেটে চিনির কর বাড়ানো হয়েছিল। এতে বাজেটের আগে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিনির দাম কয়েক দফা বেড়ে ৬৫ টাকা হয়।

তিনি বলেন, বাজেটে কর কমানোর ঘোষণা আসার আগেই পাইকারিতে চিনির দাম কমে। সপ্তাহ দুই ধরে চিনির কেজি আমাদের কেনা পড়ছে ৫৫ টাকার মতো। এ কারণে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছিলাম। বাজেটে কর কমানোর প্রস্তাব দেয়ায় সামনে নিঃসন্দেহে দাম আরও কমবে। সুতরাং এ চিনি বেশি দিন ধরে রাখলে লোকসানে বিক্রি করতে হবে। তাই আসল উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি।

যোগাযোগ করা হলে সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, বাজেটে চিনির অগ্রিম কর কমানোর যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা এখনও কার্যকর হয়নি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে এসআরও জারি করার পর তা কার্যকর হবে। আমাদের ধারণা এসআরও করতে করতে এনবিআর এ মাস শেষ করে ফেলবে।

তিনি বলেন, মিলগেটে এখন প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা। প্রস্তাবিত বাজেটে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তা কার্যকর হলে চিনির দাম কিছুটা কমবে। এতে খুচরা বাজারে চিনির কেজি ৫৩-৫৪ টাকা হতে পারে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেশি।

খুচরা বাজারে এখন অনেক ব্যবসায়ী চিনির কেজি ৫৫ টাকায় বিক্রি করছেন, যা প্রস্তাবিত বাজেটের আগে ছিল ৬০ টাকা। এ বিষয়ে বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, দাম কমে যাবে বিধায় তারা দাম কমিয়ে বিক্রি করে ফেলছে।

দৈনিক বগুড়া