সাদাস্রাব বা লিকোরিয়া একটি প্রচলিত রোগ। নারীর জরায়ু থেকে এক ধরনের শ্বেত বর্ণের তরল স্রাব নির্গত হয়, যাকে লিকোরিয়া বলে। সংস্কৃত ভাষায় একে শ্বেতপ্রধারাও বলা হয়। এমনিতে জীবনে কমবেশি সবারই ভেজাইনা থেকে হালকা সাদাস্রাব বা লিকোরিয়া নিঃসৃত হয়। তাই অনেকে এটিকে তেমন গুরুত্ব দেন না। তবে যখন সাদাস্রাব নির্গত হওয়ার পরিমাণ খুব বেশি হয়, তখন বিষয়টি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা এ থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে ভেজাইনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
চিকিৎসকের কাছে গেলে অন্য সমস্যার পাশাপাশি তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বলে থাকেন এবং সে সঙ্গে এও বলেন যে এর ফলে তাদের স্বাস্থ্যহানি হচ্ছে। এ কারণে তারা মানসিকভাবেও উৎকণ্ঠিত থাকেন।
যেমন মাসিক শুরুর আগের বয়সে এবং মনোপজের পর যোনিরস খুব অল্প নিঃসৃত হয়। আবার সম্যক ধারণার অভাবে স্বাভাবিক পরিমাণ রসকে অনেকের কাছে অতিরিক্ত সাদাস্রাব মনে হতে পারে।
সাদাস্রাব-এর কারণ ও লক্ষন সমূহঃ
১. জরায়ুতে ব্যাকটেরিয়া জন্মালে। জরায়ু সব সময় ভেজা থাকে, তাই তাড়াতাড়ি ব্যাকটেরিয়া বাসা বাধতে পারে।
২. ছোঁয়াচে যৌন রোগ।
৩. ইস্ট এর সংক্রামন ঘটলে।
৪. অতিরিক্ত সাদা স্রাব-এ কোমরে ব্যথা করে।
৫. গন্ধ যুক্ত সাদাস্রান নিঃসরণ।
৬. তলপেট ভারি হয়ে থাকা।
৭. শরীর দুর্বল লাগা।
৮. চোখের নিচ গর্ত হয়ে যাওয়া, চোখের নিচ কালো হয়ে যাওয়া।
৯. বদ হজম।
১০. জরায়ুতে চুলকানি অথবা জ্বালাপোড়া।
১১. আন্ডার গার্মেন্টস এ দাগ লেগে থাকা।
১২. মুখের মলিনতা নষ্ট হয়ে যাওয়া।
সাদা স্রাব নিরাময়ে ঘরোয়া পদ্ধতিঃ
১. এলাচি দানা মেয়েদের জন্য খুব উপকারি। প্রতিদিন এলাচি খেলে শরীরে হরমোনের সমতা থাকে। সাদাস্রাব এর জন্য প্রতিদিন রাতে একটি গ্লাসে ৪/৫ টা এলাচি দানা দিয়ে রাখবেন। সকালে উঠে পানিটা খেয়ে ফেলবেন অথবা হারবাল চা-তে এলাচি দানা ব্যবহার করতে পারেন।
২. জরায়ুর মুখ ধোয়ার সময় ৫ চামচ ভিনেগার অথবা অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার এবং ১ চামচ লবন পানিতে মিশিয়ে ধুবেন, আরাম পাবেন।
৩. প্রতিদিন ১/২ কোয়া রসুন খেলে সাদাস্রাব কমবে।
৪. আধা চামচ বেকিং সোডা পানিতে গুলিয়ে জরায়ুর মুখ ভালো ভাবে ধুলে সাদাস্রাব কমবে।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেনঃ
• যখন স্রাবের রং একদম সাদা না হয়ে হলুদ, সবুজ বা ধূসর সাদা বর্ণের হয়।
• যদি দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব নিঃসৃত হয়।
• লিকোরিয়া নির্গত হওয়ার পাশাপাশি যদি ভেজাইনায় চুলকানি হয়।
দৈনিক বগুড়া