বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়া-২ আসনে মান্নার গলার কাঁটা জামায়াত

বগুড়া-২ আসনে মান্নার গলার কাঁটা জামায়াত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন তিনি। কিন্তু মান্নার গলায় কাঁটা হয়ে দেখা দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা মাওলানা শাহাদাতুজ্জামান। দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাইয়ে তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। শাহাদাতুজ্জামান ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এমপি ছিলেন। অন্যদিকে মান্না তিনবার নির্বাচন করেও জয়ের দেখা পাননি।

সূত্র জানায়, বগুড়ার সাতটি আসনের মধ্যে চারটিতেই জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্তে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তিনটি আসনে তাদের মনোনয়ন বাতিল হয়। একমাত্র বগুড়া-২ আসনে মাওলানা শাহাদাতুজ্জামান টিকে আছেন। আজ রবিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। তিনি মনোনয়নপত্র রাখবেন না প্রত্যাহার করবেন, তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা।

বগুড়া-২ আসনে মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়াও প্রার্থী রয়েছেন জেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতি ও বর্তমান এমপি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি জামায়াত নেতা মাওলানা শাহাদাতুজ্জামান, ইসলামী আন্দোলনের জামাল উদ্দিন এবং মুসলিম লীগের শফিকুল ইসলাম। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াতের মাওলানা শাহাদাতুজ্জামান বিএনপির প্রার্থীকে হারিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। সেই সময় ডাকসুর সাবেক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না জনতা মুক্তি পার্টি থেকে কাস্তে প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে দুই হাজার ১৮০ ভোট পেয়ে ১১ জনের মধ্যে অষ্টম স্থান লাভ করেন।

আলোচিত আসনটিতে ১৯৯৬ সালে এমপি হন বিএনপির এ কে এম হাফিজুর রহমান। মাহমুদুর রহমান মান্না আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। ভোট পান প্রায় ১৯ হাজার ৮৭১ ভোট। ২০০১ সালে এমপি হন বিএনপির রেজাউল বারি ডিনা। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না ভোট পান ৪৭ হাজার ৮১৮। বিএনপির এ কে এম হাফিজুর রহমান ২০০৮ সালে ফের এমপি হন। ২০১৪ সালে আসনটিতে এমপি হন জাপা নেতা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ।

ভোটার ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সার্বিক বিষয় পর্যালোচনায় স্পষ্ট, নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মান্নার ধানের শীষ ও শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর লাঙল প্রতীকের মধ্যে। তবে কোনো কারণে জামায়াতের নেতা মাওলানা শাহাদাতুজ্জামান প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে হিসাব হবে অন্য রকম। যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হলেও শাহাদাতুজ্জামান এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয়। শিবগঞ্জের বিভিন্ন স্টলে চায়ের আড্ডা, হাটাবাজারসহ নানা এলাকায় এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

শিবগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বগুড়া-২ আসনে ভোটের হিসাব অত্যন্ত সহজ। আসনটি বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা বিভিন্ন সময়ে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হয়েছেন। জোটের স্বার্থে জামায়াতের প্রার্থী সরে দাঁড়াবেন।’

দৈনিক বগুড়া