শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়ায় উৎসব আমেজে আলুর ক্ষেতে কৃষকের সাময়িক সংসার

বগুড়ায় উৎসব আমেজে আলুর ক্ষেতে কৃষকের সাময়িক সংসার

যতদুর চোখ যায়, আলু ক্ষেতে পরিলক্ষিত হচ্ছে ব্যাপক জনঅংশগ্রহন। শেষ মূহূর্তের আলু তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ- কৃষাণীরা।

বিস্তীর্ন মাঠজুড়ে অসংখ্য নারী শ্রমিকের  অংশগ্রহনে আর কৃষকের পরিবার পরিজন, আত্মীয় স্বজনের কর্মমুখরতায় প্রাকৃতিক উৎসবে মেতেছে আলুর ক্ষেত। পুরুষরা আলু তোলার জন্য কোদাল দিয়ে মাটি আলগা করে দিচ্ছেন আর নারীরা সেই আলগা মাটি থেকে আলু তুলে জড়ো করছেন। জড়োকৃত আলুগুলি  বস্তায় ভরার কাজ করছেন কেউ কেউ। আলু ভর্তি বস্তাগুলি কাঁধে চেপে জমির আইল দিয়ে পায়ে হেটে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন পুরুষ শ্রমিকরা।

আলু কেনার জন্য ব্যবসায়ীরাও সরাসরি ক্ষেতে এসে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ করছেন। কৃষকের  শহুরে আত্বীয় স্বজনরাও উৎসাহী মন নিয়ে  ছুটে আসছেন আলু ক্ষেতে। তারাও সহায়ক হিসাবে কাজ করে মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় বন্দী করে রাখছেন  নিজেদের উৎসাহব্যন্জক, কর্মমুখর ছবি। ক্ষেতে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা আলু নিয়ে খেলছে। ক্ষেতের পাশেই নতুন আলু দিয়ে চলছে দুপুরের রান্না। সময় গড়িয়ে এলে ক্ষেতেই আয়োজন হচ্ছে  খাবারের।

বিশ্রাম নেওয়ার জন্য কোন কোন ক্ষেতের পাশে পলিথিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে হালকা ক্ষণস্থায়ী ঘর।  উৎসবমুখর পরিবেশের এসব দৃশ্য দেখলে মনে হবে ক্ষেতেই সংসার  সাজিয়েছেন কৃষক। এমন চিত্র  এখন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠজুড়ে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার আমশট্ট গ্রামের ক্ষেতে চলছে আলু তোলার কাজ। সেখানে কৃষক বধূ দাশমিনা রায় জানান, রান্না উপকরন, হাড়ি পাতিল, পানির বালতি সহ ক্ষেতে এসেছেন। তাছাড়া পালনকৃত ছাগলগুলিও সাথে করে নিয়ে এসেছেন। সারাদিন আলুর ক্ষেতে থাকতে হবে। ফিরবেন সন্ধ্যা বেলা।

একই ক্ষেতে  নারী শ্রমিকদের সাথে  দলবেধেঁ আলু তুলছে স্বামী পরিতক্তা সাফিয়া। সাফিয়া জানায়, সে সারাদিন আলু তোলার বিনিময়ে ২০ কেজি আলু পায়। ২০ কেজি আলুর  বর্তমান দাম ২০০ টাকা।পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় কম পারিশ্রমিক পেলেও সবার সাথে কাজ করে আনন্দিত। সাফিয়া আরও জানায়, প্রাপ্ত আলুগুলির কিছু জমা করে রাখছে সারাবছর ধরে নিজে খাওয়ার জন্য আর কিছুটা আত্মীয় স্বজনদের দেওয়ার জন্য। অশ্রুসিক্ত হয়ে সাফিয়া জানায়, গরীবরা আত্মীয়দের তেমন কিছু দিতে পারে না। কাজ করে জমাকৃত সামান্য আলুর কিছু অংশ উপহার দিয়ে মনের বন্ধন গাঢ় করে।

গোবিন্দপুর ইউনিয়নের মাজিন্দা গ্রামের কৃষক বিকাশ চন্দ্র  জানান, তিনি ২০ বিঘা  জমিতে এবার আলু রোপণ করেছেন। তার জমিগুলো থেকে আলু উত্তোলন চলছে। বিঘা প্রতি আলুর জাতভেদে ৫০ থেকে ৮০ মন আলু পাওয়া যাচ্ছে।  বাম্পার ফলন আর ভাল দাম পাওয়ায় মনে ফূর্তি অনুভব করছেন। তিনি আরও জানান, বিঘা প্রতি  আবাদ খরচ বাদ দিয়ে আলুর জাতভেদে ১৪ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হবে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দুপচাঁচিয়ার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠে এবার ৫ হাজার ৭ শ ৭০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

এবার উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির!
বগুড়ায় পানি নিষ্কাশনে ড্রেন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
বগুড়ায় দাম কমেছে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের
বগুড়ার বিখ্যাত সাদা সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
ঈদে ট্রেন যাত্রার পঞ্চম দিনের টিকিট বিক্রি শুরু
গাবতলীতে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত
সারিয়াকান্দিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা পালিত
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু