বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় কোরবানিযোগ্য পৌণে ৪ লাখ গবাদি পশু প্রস্তুত

বগুড়ায় কোরবানিযোগ্য পৌণে ৪ লাখ গবাদি পশু প্রস্তুত

বগুড়ায় প্রত্যেক বছর কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্যক্তি পর্যায়ে ও খামারিরা গবাদি পশু পালন করে থাকেন। বাড়তি লাভের আশায় কেউ তিন মাস আবার অনেকেই ছয় মাস আগে থেকে গবাদি পশু পালন করেন।

এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এরইমধ্যে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কোরবানিযোগ্য করে তোলা হয়েছে প্রায় পোনে ৪ লাখ গবাদি পশু। জেলায় প্রায় ৪১ হাজার খামারিসহ ব্যক্তি পর্যায়ে বাসাবাড়িতে এসব পশু পালন করা হচ্ছে।

বৃহষ্পতিবার (০৯ জুলাই) জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

বগুড়ায় ইতোমধ্যেই এসব পশু বিক্রির জন্য জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে তোলা হচ্ছে। দামদরে মিলে গেলে বিক্রিও করা হচ্ছে। জেলার বাইরের ব্যাপারিরাও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার বাইরের জেলার পশুও এ জেলার ব্যাপারিরা কিনে আনছেন। সবমিলিয়ে এ জেলায় কোরবানির পশুর কোনো সঙ্কট পড়বে না। দেশীয় পশুতেই কোরবানি সম্পন্ন করতে পারবেন বগুড়াবাসী এমনটা দাবি সংশ্লিষ্টদের।

এদিকে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার রোধে সংম্লিষ্টদের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খামারি ও পশু পালনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র। পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জেলার মোট ১২টি উপজেলার ৪০ হাজার ৮শ’ ৯ জন খামারি মোট ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৫শ’ ৭৭টি গবাদি পশু কোরবানিযোগ্য করে তুলেছেন।

এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪০ হাজার ৫০৩টি, গাবতলীতে ৩১ হাজার ৪৪৫টি, সারিয়াকান্দিতে ৩৪ হাজার ৫৫৭টি, সোনাতলায় ২৫ হাজার ৭৪৭টি, শিবগঞ্জে ৪১ হাজার ৪৩টি, কাহালুতে ২৬ হাজার ৫৭৮টি, দুপচাঁচিয়ায় ৩০ হাজার ১৬৪টি, আদমদীঘিতে ২৫ হাজার ৮১২টি, নন্দীগ্রামে ২২ হাজার ২৭২টি, শেরপুরে ৩৯ হাজার ৯৫০টি, ধুনটে ৩২ হাজার ৫৮৮টি এবং শাজাহানপুর উপজেলায় ২৫ হাজার ৯১৮টি গবাদি পশু রয়েছে।

এ পশুগুলোর মধ্যে গরু (ষাঁড়, বদল ও গাভি) ২ লাখ ৫০ হাজার ৮শ’ ৫২টি, মহিষ ২ হাজার ৮শ ১৩টি, ছাগল ১ লাখ ৩ হাজার ২শ’ ৫২টি এবং ভেড়া ১৯ হাজার ৬শ’ ৬০টি। গেল ঈদে এ জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ পশু জবাই করা হয়।

জানা গেছে, এ জেলায় স্থায়ী হাট রয়েছে ৩৮টির মতো। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে স্থায়ী হাটসহ প্রায় ৫০-৬০টির মতো পশুর হাট বসে। এসব হাটে কোরবানিযোগ্য পশুগুলো বিক্রির জন্য তোলা হবে। ইতোমধ্যেই স্থায়ীসহ অস্থায়ী হাটে বিক্রি শুরু করা হয়েছে।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, জেলার কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাবে। আবার বিভিন্ন জেলার পশুও এ জেলায় আসবে। তাই ঈদে কোরবানির পশুর কোনো সঙ্কট হবে না।

তিনি জানান, বগুড়ায় গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ যেন ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার না করেন সেজন্য ইতোপূর্বেই প্রচারের কাজ শুরু হয়েছে। হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মানুষের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ করা হচ্ছে। জেলা কার্যালয়ের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে স্ব স্ব প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা এ কাজের দেখভাল করবেন।

দৈনিক বগুড়া