বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাজিলের জার্সি গায়ে নেইমারের ১০ বছর, ১০টি সেরা মুহূর্ত

ব্রাজিলের জার্সি গায়ে নেইমারের ১০ বছর, ১০টি সেরা মুহূর্ত

১০ আগস্ট ২০১০, ব্রাজিলের জাতীয় দলে উদিত হয়েছিল নতুন এক সূর্য; যার হাত ধরে ফুটবলীয় শ্রেষ্ঠত্বের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল ল্যাটিন আমেরিকান দেশটি। তিনি আর কেউ নন, ব্রাজিলের বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় তারকা ফুটবলার নেইমার দস সিলভা সান্তোস জুনিয়র।

সোমবার (১০ আগস্ট) পূরণ হয়েছে নেইমারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের এক দশক। এ দশ বছরে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে ১০১টি ম্যাচ খেলেছেন নেইমার, করেছেন ৬১টি গোল। নিজের অভিষেক ম্যাচের ২৮ মিনিটেই গোলের খাতা খুলেছিলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত গোল করেছেন ভিন্ন ২৯টি দেশের বিপক্ষে, হ্যাটট্রিক করেছেন ৩টি, যার মধ্যে এক ম্যাচে ছিল আবার ৪ গোল।

নেইমারের দশ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সেরা দশটি মুহূর্ত বাছাই করেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। জাগোনিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো নেইমারের সেরা সেই ১০টি মুহূর্ত:

১০ আগস্ট ২০১০ (বনাম যুক্তরাষ্ট্র)
১৯৯৪ সালে রোনালদো দ্য লিমার পর নেইমারের অভিষেকের জন্যই এত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল সেলেকাওরা। ২০১০ সালের বিশ্বকাপে সুযোগ না পেলেও, একই বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে অভিষেক হয়ে যায় নেইমারের। সে ম্যাচের মাত্র ২৮ মিনিটের মধ্যেই প্রথম গোল করে ফেলেন তিনি।

২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ (বনাম আর্জেন্টিনা)
সুপার ক্লাসিকো লা আমেরিকার প্রথম আসরে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে প্রথম লেগের ম্যাচে গোল শূন্য ড্র করেছিল ব্রাজিল। দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে রোনালদিনহো এবং লুকাস মৌরার সঙ্গে মিলে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় সেলেকাওরা। ম্যাচে একটি গোল করেন নেইমার।

৩০ জুন ২০১৩ (বনাম স্পেন)
২০১৩ সালের কনফেডারেশনস কাপে দুর্দান্ত ছিলেন নেইমার। জাপান এবং মেক্সিকোর বিপক্ষে অসাধারণ ভলিতে গোল করার পর ইতালির বিপক্ষে দিয়েছিলেন দৃষ্টিনন্দন এক ফ্রি-কিক গোল। তবে নিজের সেরাটা ফাইনাল ম্যাচের জন্য জমিয়ে রেখেছিলেন নেইমার। ফাইনালে এক গোলসহ জাদুকরী পারফরম্যান্সে নিজ দলকে ৩-০ গোলে জিতিয়ে শিরোপা হাতে নেন নেইমার।

১২ জুন ২০১৪ (ক্রোয়েশিয়া)
চার বছর আগের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা না পেলেও, ২০১৪ সালে দলের মূল খেলোয়াড়ই ছিলেন নেইমার। ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ অভিষেক হয় তার। সে ম্যাচটি আবার ছিল ক্যারিয়ারের ৫০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক গোলে উপলক্ষ্যটি রাঙিয়ে নেন নেইমার।

১৪ অক্টোবর ২০১৪ (বনাম জাপান)
আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখনও পর্যন্ত জাপানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৮টি গোল করেছেন নেইমার। এর মধ্যে এক ম্যাচেই করেছিলেন ৪টি। কালাঙয়ের জালান বেসার স্টেডিয়ামে ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবরে ৪-০ গোলে জিতেছিল ব্রাজিল। সেই ম্যাচে সবকয়টি গোলই করেছিলেন নেইমার।

২০ আগস্ট ২০১৬ (বনাম জার্মানি)
বছর তিনেক আগে কনফেডারশনস কাপ জেতার পর ২০১৬ সালে অলিম্পিক সোনার জন্য যাত্রা শুরু করেন নেইমার। এবারও নিজেদের ঘরের মাঠে হওয়া অলিম্পিকের ফাইনালে নেইমারের ফ্রি-কিক গোলের পরেও খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। নিলস পিটারসনের শট ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক ওয়েভারটন। শেষ শটে গোল করে দলের শিরোপা নিশ্চিত করেন নেইমার।

১০ নভেম্বর ২০১৬ (বনাম আর্জেন্টিনা)
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটি দুই ক্লাব সতীর্থ লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়রের মুখোমুখি লড়াই। যেখানে মেসি ছিলেন নিষ্প্রভ। তবে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান নেইমার। নিজের ৭৪ ম্যাচ খেলতে নেমে করে ফেলেন ৫০তম গোল, দলকে জেতান ৩-০ ব্যবধানে। তার আগে ব্রাজিলের হয়ে গোলের ফিফটি করেছেন শুধু পেলে (৭৭), রোমারিও (৫৫) এবং রোনালদো (৬২)।

২৪ মার্চ ২০১৭ (বনাম উরুগুয়ে)
উরুগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচটিতে হ্যাটট্রিক করেছিলেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার পাওলিনহো। কিন্তু ম্যাচ শেষে তিনি এক বাক্যে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন নেইমারকে। ব্রাজিলের ৪-১ গোলের জয়ে নেইমার করেছিলেন একটি গোল।

২ জুলাই ২০১৮ (বনাম মেক্সিকো)
রাশিয়া বিশ্বকাপে মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচটিতে দুর্দান্ত খেলেছিল ব্রাজিল। তবু গোলরক্ষক গুইলেরমো অঁচোয়ার অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের কারণে গোল দিতে পেরেছিল মাত্র ২টি। প্রথমার্ধে নেইমারের অসাধারণ এক শট ঠেকিয়ে দেন অঁচোয়া। তবে দ্বিতীয়ার্ধে রবার্তো ফিরমিনোকে দিয়ে করান এক গোল এবং নিজেও করেন আরেক গোল। যা কোয়ার্টার ফাইনালে তুলে দেয় ব্রাজিলকে।

১০ অক্টোবর ২০১৯ (বনাম সেনেগাল)
ব্রাজিলের হয়ে ১০০ ম্যাচ খেলার সময় কিংবদন্তি ডিফেন্ডার রবার্তো কার্লোসের বয়স ছিল ৩১ বছর। কিন্তু মাত্র ২৭ বছর বয়সেই ব্রাজিলের হয়ে শততম ম্যাচটি খেলেছেন নেইমার। গত বছরের ১০ অক্টোবর সেনেগালের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি।

দৈনিক বগুড়া