বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিড ডে মিল – প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ...

মিড ডে মিল – প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ...

খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষা (মিড ডে মিল) নিশ্চিত করতে পারে শিশুকে স্কুলমুখি করে জাতিকে শতভাগ শিক্ষিত করতে। জানা যায় ১৯৩৯ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে স্কুলগুলিতে শিক্ষার্থীর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায় এবং সে দেশে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। জাপান সরকার তখন শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরে একবেলা স্কুলে ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করে। সেই থেকে শিক্ষার্থীরা আবার স্কুলমুখি হতে শুরু করে। যত অভাবেই থাকুক বাচ্চাকে কাজে না পাঠিয়ে একবেলা খাবার গ্রহণ ও সন্তান লেখাপড়া শিখবে ভেবে, বাবা মায়েরাও নিশ্চিন্ত হয়ে সন্তানকে স্কুলে দিয়ে পূর্ণ উদ্যমে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিলেন।
শুধুমাত্র এই একটি পলিসির কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সব হারিয়েও জাপানের ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগেনি। জাতি হিসেবে জাপানিরা বর্তমানে শতভাগ শিক্ষিত। জাপান এখন বিশ্বের সেরা ধনী দেশও। আজও সেদেশে মিড ডে মিল চালু রয়েছে।
বর্তমান সরকারের “রূপকল্প ২০২১’’ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের শিশুদের পুষ্টিহীনতা কোনভাবেই কাম্য নয়। এ শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। যে কোন মূল্যে তাদের দৈহিক, মানসিক, নৈতিক, মানবিক ও নান্দনিক বিকাশ সাধনের মাধ্যমে উন্নত জীবন দর্শনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বিশ্বায়নের এ যুগে সময়ের চাহিদার সংগে সংগতি রেখে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে গতিশীল ও সম্প্রসারিত করার মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা এবং তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক জ্ঞানসমৃদ্ধ মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে “রূপকল্প ২০২১’’ বাস্তবায়ন করতে হবে। এ লক্ষ্য সামনে রেখে সরকার প্রাথমিক শিক্ষা  ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক গৃহিত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে মিড-ডে মিল অন্যতম। বিশ্বের সকল উন্নত দেশে এমনকি ভারতের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারিভাবে মিড-ডে মিল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকার দেশের বিভিন্ন উপজেলায়  গত অক্টোবর ২০১৪ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার সরবরাহের মাধ্যমে মিড-ডে মিল চালু করেছে। বর্তমানে সারাদেশের প্রায়  প্রায় এক হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যা শতভাগ স্কুলে চালু করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে । এই খাতে সরকারের ভর্তুকি হবে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা । তবু ও সকারের মতে এই ভর্তুকি হচ্ছে আগামী দিনের জন্য ইনভেন্সমেন্ট। পরবর্তী প্রজন্ম হবে শতভাগ শিক্ষিত প্রজন্ম। যারা এই দেশ টাকে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করবে। দেশকে নিয়ে যাবে উন্নতির শিখরে ।

দৈনিক বগুড়া