বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যে কোনো কাজ শুরুর আগে বিশ্বনবীর তিন শর্ত

যে কোনো কাজ শুরুর আগে বিশ্বনবীর তিন শর্ত

আল্লাহ তায়ালা যেমন তার বান্দার জীবনযাপনে সুবিধার জন্য পৃথিবীতে এতো কিছু সৃষ্টি করেছেন। তাই প্রতিটি কাজের শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা ও দোয়া করা আবশ্যক। আর প্রতিটি কাজের শুরুতেই প্রিয়নবী থেকে দোয়ার নির্দেশ রয়েছে।

বিশেষ করে, মানব কল্যাণে কাজ করার জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মেনে চলা জরুরি। যার ফলে যে কোনো কাজেই আসবে চূড়ান্ত সফলতা। মানুষের কল্যাণে কাজ করার পূর্বশর্ত তিনটি। এ তিনটির কোনোটি ছাড়াই চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। শর্ত তিনটি কী?

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের প্রতিপালক অত্যন্ত দয়ালু। কারণ, যে ব্যক্তি শুধু একটি সৎ কাজের ইচ্ছা পোষণ করে তার জন্য একটি নেকি লেখা হয়। কাজটি বাস্তবায়ন হোক আর না-ই হোক। অতঃপর যখন সে ব্যক্তি কাজটি সম্পাদন করে তখন তার আমলনামায় ১০ নেকি লেখা হয়।’

এ নেকি ও সফলতা পেতে তিনটি শর্তই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলো-
- ইতিবাচক মানসিকতা,
- বিশুদ্ধ নিয়ত ও
- স্থির সিদ্ধান্ত।

ইতিবাচক মানসিকতা স্থির সিদ্ধান্ত ও বিশুদ্ধ নিয়ত ছাড়া কোনো কাজই সফলতাও পাওয়া যায় না। এ তিনটি বিষয়ে সমন্বয় হলেই বান্দার আমলনামায় নেক লেখা শুরু হয়। হাদিসে এসেছে, এ কারণেই প্রত্যেক কাজের জন্যই ইতিবাচক মানসিকতা, স্থির সিদ্ধান্ত ও নিয়তের প্রয়োজনীয়তা অত্যাধিক। আর এতে দুনিয়া ও পরকালের ভরপুর কল্যাণ রয়েছে। হাদিসের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ বুখারিতে এসেছে-

হজরত ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সব কাজই নিয়তের উপর নির্ভরশীল। আর প্রত্যেক মানুষের জন্য তাই রয়েছে যা সে নিয়ত করে। অতএব যার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসূলের উদ্দেশ্যে হবে, তার হিজরত আল্লাহ এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জন্যই (পরিগণিত) হবে। আর যার হিজরত দুনিয়া লাভ কিংবা কোনো নারীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হবে, তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই গণ্য হবে, যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে। (বুখারি ও মুসলিম)

সুতরাং কোনো মানুষ যদি আল্লাহ ও তার রাসূলের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্রতম কোনো কাজও করে, তবে সে আল্লাহ এবং তার রাসূলের সন্তুষ্টি লাভে সক্ষম হবে। পক্ষান্তরে কোনো মানুষ যদি দুনিয়ার উদ্দেশ্যে কোনো কাজ করে থাকে তবে সে তাই পাবে; যা সে পাওয়ার নিয়ত বা ইচ্ছা পোষণ করেছে।

সুতরাং মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হলে প্রথমেই দরকার ইতিবাচক মানসিকতা। তার পর বিশুদ্ধ নিয়ত ও স্থির সিদ্ধান্ত। নিয়ত বিশুদ্ধ ও সিদ্ধান্ত স্থির হলে ইতিবাচক মানসিকতা এমনিতেই তৈরি হয়ে যায়। এ জন্য উপরে উল্লেখিত হাদিস দুইটির ওপর যথাযথ আমল করা জরুরি। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সুমহান শিক্ষাও এটি।

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে সব ভালো কাজে ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি, স্থির সিদ্ধান্ত এবং পরিশুদ্ধ নিয়ত করে সফলতার চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছার তাওফিক দান করুন। আমিন।

দৈনিক বগুড়া