বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রজব মাসের ফজিলত ও আমল

রজব মাসের ফজিলত ও আমল

পৃথিবীতে ইসলাম আগমন করার পর থেকে বছরে ১২ মাসের মধ্যে রজবসহ ৪টি মাসকে ‘আশহুরে হুরুম’ তথা সম্মানিত মাস ঘোষণা করা হয়। রজব হিজরি মাসগুলোর মধ্যে সপ্তম মাস। রজব অর্থ সম্ভ্রান্ত, প্রাচুর্যময়, মহান।
 

এ সম্পর্কে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কাছে গণনায় মাস ১২টি, তন্মধ্যে ৪টি (সম্মানিত হওয়ার কারণে) নিষিদ্ধ মাস, এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। - সুরা তওবা,আয়াত নং ৩৬।

হাদিসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বারো মাসে বছর। তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি ধারাবাহিক, জিলকদ, জিলহজ, মহররম আর চতুর্থটি হলো রজব; যা জুমাদাল উখরা  ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী।’ -বুখারি, হাদিস নং ৬৭২।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাসকে খুবই গুরুত্ব দিতেন। এ মাসের চাঁদ দেখার সাথে সাথে বিশেষ কিছু আমল শুরু করতেন। অন্যদেরকেও আমল করতে বলতেন।

হাদিসে এসেছে, হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, যখন রজব মাস শুরু হতো, তখন এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়াবাল্লিগনা রমাদান।’

অর্থ, হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করে দিন। - আল মুজামুল আওসাত, হাদিস নং ৩৯৩৯।

রজব মাসে অন্য সকল মাসের তুলনায় বেশি দোয়া কবুল করা হয়। কারণ আল্লাহ বিশেষ কিছু রাত-দিনে দোয়া ব্যাপকভাবে কবুল করেন। এসব রাত-দিনের মধ্যে পাঁচটি রাত অন্যতম।

আবদুল্লাহ ওমর রা.বলেন, এমন পাঁচটি রাত আছে যেগুলোতে আল্লাহ বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না। জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত ও দুই ঈদের রাত। -সুনানে বায়হাকি, হাদিস নং ৬০৮৭।

ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগে রজব মাসকে কেন্দ্র করে মুশরিকদের বিভিন্ন প্রথা প্রচলিত ছিল। তারা দেবতা-প্রতিমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু জবাই করত। এটাকে ‘আতিরা’ বলা হতো। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই শিরকি প্রথা দূর করেছেন।

তিনি ঘোষণা করেছেন, ইসলামে ‘ফারা’ (উট বা বকরির প্রথম বাচ্চা প্রতিমার উদ্দেশ্যে) জবাই করার কোনো বিধান নেই এবং ‘আতিরা’ও নেই। অর্থাৎ রজব মাসে প্রতিমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু জবাই করার প্রথা নেই।’ -বুখারি, হাদিস নং ৮২২।

রজব মাস সম্পর্কে হজরত আবু বকর বলখি রহ. বলেন, রজব ফসল রোপণের মাস। শাবান ফসলে পানি সেচ দেওয়ার মাস। আর রমজান হলো- ফসল তোলার মাস। ’ তিনি আরও বলেন, ‘রজব মাস ঠাণ্ডা বাতাসের মতো, শাবান মাস মেঘমালার মতো। আর রমজান মাস হলো- বৃষ্টির মতো। -লাতায়েফুল মাআরেফ ১৪৩।

লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ: