বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে মাচায় হলুদ তরমুজ চাষে সাড়া ফেলেছে কৃষি প্রেমি সালাম

শেরপুরে মাচায় হলুদ তরমুজ চাষে সাড়া ফেলেছে কৃষি প্রেমি সালাম

গরমের সময় শরীরে পানি শূন্যতা রোধ করতে এমনিতেই তরমুজের জুরি নেই, তার ওপর নুতন জাতের তরমুজ দেখে লোকজন হুমরি খেয়ে পড়ছেন। হলুদ তরমুজের ওপরে গায়ের রং হলুদ হলেও ভেতরে একদম অন্যসব তরমুজের মতো লাল এবং স্বাদও অনেক বেশি। রাস্তার পার্শ্বে আবাদ হওয়ায় প্রতিদিনই শত শত লোকজন দেখতে আসছেন এবং তরমুজ ক্রয় করার আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর বড়ইদহ গ্রামের পেশায় শিক্ষক হওয়ার পরও একজন কৃষি প্রেমি হাইস্কুল শিক্ষক আব্দুস সালাম রসালো ফল ‘হলুদ জাতের’ ও কালো জাতের তরমুজ চাষ করে এলাকায় কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বর্তমানে গাছে ফল দেখে অধিক লাভ হবে এমনটায় আশা করছেন আব্দুস সালাম।

সরেজমিনে দেখাগেছে, ৮৬শতক জমিতে উন্নত জাতের তিপ্তি, ব্লাক বেবি ও ব্লাক সুইট তরমুজ চাষ করে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে। তরমুজ গুলো পলি মাটিতে লাগানো চারা গাছ গুলো ফল আসার আগ মহুর্তে বাঁশের মাচায় উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জমির মাচায় হলুদ ও গারো সবুজ তরমুজ ঝুলছে। হলুদ রং বেষ্টিত তিপ্ত জাতের তরমুজ, গাড়ো সবুজ ব্লাক বেবি ও ব্লাক সুইট এসব উন্নত জাতের তরমুজ গুলো সুন্দর ভাবে মাঁচার নিচে ঝুলছে।

চাষী আব্দুস সালাম জানান, বিভিন্ন ধারনের ফলের বাগান আছে যেমন, মালটা, পেয়ারা, ভিয়েতনাম নারিকেলসহ অন্যন্যা তবে নতুন জাতের এই তরমুজ চাষ তরতে তিনি আরো উৎসাহিত কারণ শেরপুরে তিনিই প্রথম মাচায় তরমুজ চাষ করে সফল। গত বছর করোনা কালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় ইউটিউব দেখে মাচায় তরমুজ চাষ করে, পর্যাপ্ত পরিমান ফল আসলেও তরমুজ বাজার জাত করার মাঝামাঝি সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লোকশান গুনতে হয়েছে।

আব্দুস সালাম আরো জানান, শুরু থেকে জমিতে জৈবসার, অন্যান্য সার প্রয়োগের পর বেড তৈরি করে পুরো বেড পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে গাছ রোপণ করেছেন। বর্তমানে এই ফল গুলির বয়স এখন ৪৬ দিন। এরই মধ্যে ফল গুলোতে নেটিং ব্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। এই ফল গুলি ৬০ দিনের মাথায় প্রায় ৩/৪ কেজি ওজন হলে পরিপক্ক হবে এবং তা বাজার জাত করার উপযোগী হবে। সে ৮৬ শাতাক জমিতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করেছে এবং সেখান থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রয় করবে। তবে বড়ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে লাভবান হবে।

এই ক্ষেত থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ফল পাওয়া যাবে, এখানে আবার কিছু নষ্ট হবে আবার এলাকাবাসীও সখের বসত খাবে। এই তরমুজ গুলো বাজারে ৪৫ থেকে ৫৫টাকা কেজি দরে বাজার মূল্য হবে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা বিক্রয় হবে।

উদ্ভিদ সংরক্ষন অফিসার মো: মাসুদ আলম তিনি জানান, নতুন জাতের ফসল হিসেব আমরা কৃষকের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছি ও পরামর্শ প্রদান করিছ। যেন কোর রোগবালাই ধরতে না পারে। চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

শেরপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, উপজেলায় এবার প্রায় নতুন ফসল হিসেবে ২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। কিন্তু হলুদ জাতের তরমুজ এই প্রথম চাষ করেছেন আব্দুস সালাম। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করছি এবং কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। আসা করছি আগামী বছর এই জাতের তরমুজ চাষ আরো বাড়বে এবং কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।

দৈনিক বগুড়া