বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে ৯৯৯ এ কল: ৬ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত ব্যক্তি উদ্ধার

শেরপুরে ৯৯৯ এ কল: ৬ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত ব্যক্তি উদ্ধার

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে তথ্য দেওয়ার ছয় ঘন্টার মাথায় অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে বগুড়ার শেরপুর থানা পুলিশ। অপহৃত ব্যক্তির নাম আবু জামান খন্দকার ওরফে আরজু (৪৮)। তবে পালিয়ে যাওয়ায় এই ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

শুক্রবার দুপুরের দিকে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দ বগুড়া গ্রাম থেকে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। উদ্ধার হওয়া এই ব্যক্তি উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের সদর হাঁসড়া গ্রামের বাসিন্দা ও একইগ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে। বিকেল চারটার দিকে উক্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদি হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে জানা যায়, সদর হাঁসড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের পাঁচ বিঘা ফসলি জমির মাটি কাটছেন পাশের ভবানীপুর ইউনিয়নের মাটি-বালু ব্যবসায়ী জহুরুল হক। অসংখ্য ড্রাম ট্রাকে এসব মাটি পরিবহনের কারণে গ্রামের মানুষের চলাচলের সড়ক বেহাল হয়ে পড়ে। এতে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কাছে বিষয়টি মোখিকভাবে অভিযোগ করেন। সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবার (০৮এপ্রিল) দিনগত রাত অনুমান পৌনে এগারোটার দিকে ওইসব ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা শুরু করলে স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দেয়।

স্থানীয়দের বাধার মুখে একপর্যায়ে মাটি কাটা বন্ধ করে মাটি-বালু দস্যুরা চলে গেলেও গ্রামবাসী জামাল খন্দকার ওরফে আরজুকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে চরম বাকবিতণ্ডা হয়। এরইজের ধরে শুক্রবার ভোররাতে স্থানীয় একটি ইটভাটায় যাওয়ার পথে জামাল খন্দকারকে অপহরণ করেন মাটিদস্যু জহুরুল হক ও তার লোকজন। সেইসঙ্গে বেধড়ক মারপিট করে তাকে খোর্দ্দবগুড়া গ্রামস্থ বসতবাড়ির একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। একইসঙ্গে অপহৃত ব্যক্তির পরিবারের নিকট মুক্তিপণ চাওয়া হয়। এরপর ঘটনাটি জানতে পেরে গ্রাম্য মাতব্বর মুকুল হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে সব তথ্য দেন। এরপর অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ। একপর্যায়ে অপহৃত হওয়ার ছয়ঘন্টা পর তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগী জামাল খন্দকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাকে মেরে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছিল মাটিদস্যু জহুরুল বাহিনীর সদস্যরা। এজন্য তাকে বেধড়ক মারপিট করেছে। নানা কৌশলে মুক্তিপণ হিসেবে প্রায় ৬৫হাজার টাকাও লুটে নেওয়া হয়েছে। এরপরও তাকে প্রাণনাশের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু সময়মত পুলিশ উপস্থিত না হলে তাকে মেয়ে লাশ গুম করা হতো বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তবে অভিযুক্ত জহরুল হক এসব অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা ও সাজানো নাটক বলে মন্তব্য করেন। তবে ফসলি জমির মাটি কাটা নিয়ে জামাল খন্দকার ও গ্রামের কিছু লোকের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব তৈরী হয়েছে বলে স্বীকার করেন।

শেরপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম শহিদ অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দৈনিক বগুড়া